অন্যান্য রাজ্যের মত পশ্চিমবঙ্গেও প্রাথমিক স্তরে পঞ্চম শ্রেণীকে অন্তর্ভুক্তিকরণের সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য শিক্ষা দফতর। শিক্ষক মহলের একাংশের অভিমত, এর পেছনে সরকারের দু'টি উদ্দেশ্য রয়েছে। প্রথমত সর্বভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার একটি সামঞ্জস্য তৈরী করা এবং দ্বিতীয়ত অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান।
সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে শিক্ষা দফতর থেকে প্রাইমারি ডিআই ও প্রাইমারি কাউন্সিলরদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, প্রাথমিক স্কুলগুলিকে ঢেলে সাজানোর জন্য। স্কুলে এর জন্য অতিরিক্ত শ্রেণীকক্ষ তৈরী করতে হবে। এছাড়া যে সব স্কুলে সীমানা প্রাচীর নেই, সেখানে সেগুলি নির্মাণেরও আদেশ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে বাংলায় প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা প্রায় ৬২ হাজার। পড়ুয়াদের সংখ্যা দু'লক্ষেরও বেশি। এর সঙ্গে যদি পঞ্চম শ্রেণী যুক্ত হয়, তাহলে সংখ্যা আরও ১৪ লক্ষ বাড়বে। তাই স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়ন যথেষ্ট প্রয়োজন। বিজ্ঞপ্তিতে স্কুলের পরিকাঠামো সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছে। যেই স্কুলের ন্যূনতম পরিকাঠামোও নেই, সেখানে নতুন করে সব গড়ে তোলা হবে, এছাড়া যেসব স্কুলে সেই সমস্যা নেই, সেই সব স্কুলে পঞ্চম শ্রেণীর জন্য নতুন শ্রেণীকক্ষ তৈরী করা হবে। এই গোটা প্রকল্পটি রূপায়নের জন্য অর্থাৎ অতিরিক্ত প্রায় ১৪ লক্ষ পড়ুয়াকে যথাযথ পরিকাঠামোর আওতায় এনে শিক্ষা দিতে হলে আরও ৪০ হাজার নতুন শ্রেণীকক্ষ তৈরী করতে হবে। দেশের সব রাজ্যে এখন পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা দেওয়া হয়। শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই একমাত্র চতুর্থ শ্রেণী অব্দি পড়ানো হয় প্রাথমিক স্কুলে। তাই এই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সারা রাজ্যের সঙ্গে সমানভাবে প্রাথমিক শিক্ষা দিতে চাইছে রাজ্য শিক্ষা দফতর।
উল্লেখ্য, পঞ্চম শ্রেণীতে বর্তমানে পড়ুয়া ও শিক্ষকের অনুপাত হল ৩৫:১। বর্তমানে ওই শ্রেণীতে পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ১৪ লক্ষ। হাইস্কুলে এই সংখ্যক পড়ুয়ার জন্য শিক্ষক নিয়োগ করতে হলে খরচ বেশ খানিকটা বেশি হবে। তুলনামূলকভাবে প্রাথমিকে শিক্ষদের খরচ অনেকটাই কমবে। যদি সরকার এই পদ্ধতি মেনে চলতে পারে, সেক্ষেত্রে প্রতি বছর সরকারি খাতে ৪০০ কোটি টাকা বাঁচতে পারে বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল। এইভাবে নতুন এই নিয়মের মাধ্যমে একসঙ্গে দুটি কাজ সম্পন্ন হবে। এখন দেখার, সুষ্ঠুভাবে যাতে সব কিছু সমাধা করা যায়।