অগ্নিবানে বিপর্যস্ত শহরবাসী। ভরা বৈশাখে চারপাশ যেন তেতে উঠছে ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই। ঘড়ির কাঁটা সকাল ৯টা ছোঁওয়ার আগেই তীব্র দাবদাহ ছুঁয়ে ফেলছে পথচারীদের। কিছুতেই যেন বাঁধ মানছেনা প্রচন্ড তাপপ্রবাহ। ছাতা, রোদ-চশমা, হাত মোজা বা হালকা স্কার্ফ সব ছাপিয়ে গরমের দাপট বেড়ে চলেছে গত কয়েক দিনে। এই অবস্থা থাকবে আরো আগামী দুই দিন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রয়োজন ছাড়া দিনের বেলা পথে নামছেননা লোকজন। বিদ্যালয়গুলিতে ছুটির পরও লক্ষ্য করা যাচ্ছে না উপচে পড়া যানজট। নিতান্তই কাজের তাগিদে বা বিশেষ প্রয়োজনে যারা পথে নামছেন তাদের অনেকেই হয়ে পড়ছেন অসুস্থ। গরমের তাপমাত্রার সাথে অতিরিক্ত আর্দ্রতার প্রভাবে হাঁসফাঁস করছেন সকলে। এমন অবস্থা আগামী কয়েক দিনে কমবার কোন সম্ভাবনা নেই জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। এ নিয়ে নির্বাচন কমিশন ও রাজ্য প্রশাসনও দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন।
আবহাওয়া দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয় শহর কলকাতা সহ হাওড়া, হুগলি, নদীয়া, পূর্ব মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগণায় তাপমাত্রা কমপক্ষে আরো ২ থেকে ৩ ডিগ্রি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সপ্তাহে কলকাতার তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের থেকে ২ ডিগ্রি বেশি। সর্বনিম্ন স্বাভাবিকের থেকে ৩ ডিগ্রি বেশি ছিল। বিশেষজ্ঞরা জানান, আপেক্ষিক আর্দ্রতা সর্বোচ্চ ৯২ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ৬৩ শতাংশ। তাঁরা বলেন আপেক্ষিক আর্দ্রতার মাত্রা ৫০ শতাংশের বেশি থাকলে গরমের অস্বস্তি দেখা যায়, সেখানে আপেক্ষিক আর্দ্রতার মাত্রা ৬০ শতাংশের ওপরে ।
রাজ্যে আসানসোল, বহরমপুরে ইতিমধ্যে প্রবেশ করেছে তাপপ্রবাহ। আবহাওয়া দপ্তর থেকে দুই বর্ধমান, বীরভূম, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া এই জেলাগুলোতে তাপদাহের আগাম সতর্কতা জানানো হয়েছে। অন্যান্য এলাকার তুলনায় এই এলাকাসমূহের তাপমাত্রা বাড়বে আরো ৫ ডিগ্রি বেশি।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন 'ফণী' বিদায় নেবার পর জলীয় বাষ্পে পরিবর্তন এসেছে। উত্তরের গরম হাওয়া প্রবেশ করছে বাংলার আবহাওয়ায়। যদিও স্বস্তির খবর বলতে রবিবার অবধি অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। সেদিন ঝড় -বৃষ্টির সম্ভাবনা ও সামান্য গরম কমে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন তারা। রবিবার থেকে দক্ষিণ বাতাস জোরদার হতে পারে ফলে উত্তর-পশ্চিমি বাতাসের সংঘর্ষে বাংলায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ মেঘের আবির্ভাব হতে পারে। এছাড়াও আগামী মঙ্গলবারে ঝড় বৃষ্টি হবার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা যায় ।