সপ্তাহের কাজের দিনগুলিতে ৯০ মিনিটের বেশি সময় ধরে মগ্ন থাকা যাবে না ভিডিও গেমে। এমন নির্দেশিকাই এখন জারি হয়েছে চীন দেশে। এছাড়াও রাত ১০টার পর আর খেলা যাবে না কোনো ধরণের গেম। তাছাড়া, যদি ইন গেম পারচেস করতে হয় তাহলে মাসিক খরচ বাবদ দিতে হবে ৫৭ ডলার।
সম্প্রতি চীন সরকারের পর থেকে জারি করা হয়েছে এমন নির্দেশিকা। কম বয়সীদের মধ্যে ভিডিও গেমের প্রতি আসক্তি কমানোর জন্যই নেওয়া হয়েছে এমন সিদ্ধান্ত। গেমের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি ডেকে আনছে নানা বিপদ। পড়াশোনার গুণগত মান কমার সাথে সাথে বাড়ছে চোখের পাওয়ার। ন্যাশনাল প্রেস এবং পাবলিকেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন দ্বারা জারি করা এই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ১৮ বছরের নিচে যাদের বয়স তাদের রাত ১০টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত গেম খেলা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। তাদের জন্য দিনের মধ্যে ৯০ মিনিট বরাদ্ধ করা হয়েছে গেম খেলার জন্য। সপ্তাহের কাজের দিনগুলির জন্য এই নিয়ম লাঘু করা হলেও ছুটির দুটো দিন এবং হলিডেগুলিতে এই সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ ঘন্টা।
জানা গেছে,অনলাইন ভিডিও গেম থেকে চীনের আয় সবথেকে বেশি। ভিডিও গেমের কান্ডারি চীনে প্রতিবছর শুধুমাত্র অনলাইন গেম থেকে আয় হয় ৩৩ বিলিয়ন টাকা এবং এর সাথেই প্রতিবছর গেমার বা ভিডিও গেমে আসক্ত মানুষের সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় ১০০ মিলিয়ন। চীনের প্রেসিডেন্ট সি জিংপিং-এর উদোগ্যে চীনের তরফ থেকে নেওয়া হয়েছে এই সিদ্ধান্ত। ভিডিও গেম এই মুহূর্তে ইয়ংস্টারদের মূল আকর্ষণের জায়গা হওয়ার কারণেই প্রথম টার্গেট করা হয়েছে এই গেমকে। সমাজের সাংস্কৃতিক মান উন্নত করে এখন লক্ষ্য চীনা সরকারের। সরকারের পক্ষ থেকে এই কারণে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু গেমকে 'পয়জন' অর্থাৎ বিষের আখ্যা দেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু গেম হিংসাত্মক মনোভাব বাড়িয়ে তোলার জন্য দায়ী। সেইসব গেমকে সরকারের পক্ষ থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেইসব গেম যদি কেউ কেনার চেষ্টা করে তার ক্ষেত্রেও নেওয়া হবে আইনি পদক্ষেপ, জানিয়েছে চীন সরকার।
গত বছর থেকেই চীনের শিশুদের চোখে পাওয়ার চলে আসার ঘটনাই সরকারকে বাধ্য করলো এই কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য। জানা গেছে, এবার থেকে গেম খেলার জন্য শিশুদের বা কিশোরদের নিজেদের আসল নাম এবং ইডেন্টিফিকেশন নাম্বার দিয়ে লগ ইন করে তবেই গেম সাইটে ঢুকতে হবে। এছাড়াও ইন গেম পারচেসের জন্য এবার দিতে হবে বেশি টাকা। বয়স অনুযায়ী বাড়তে থাকে সেই টাকার অঙ্ক। চীন সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, শুধুমাত্র গেম থেকে আসক্তি দূর করে মূল লক্ষ্য তাদের।