দুনিয়া ডিজিটাল হচ্ছে| তার সাথে তাল মিলিয়ে এগোতে হচ্ছে মানুষকে| নিস্তার পাচ্ছে না কচিকাচারাও| যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ছুটতে হচ্ছে তাদেরকেও| কিন্তু বিপদ ঘনাছে সেখানেই| ডিজিটাল দুনিয়ায় আটকে পড়ার ফলে শিশুদের মধ্যে দেখ্যা দিচ্ছে এক ভয়াবহ রোগ| চিকিত্সাবিজ্ঞানে এর নাম ‘গ্যাজেট ইন্ডিউসড বিহেভিওরাল প্রবলেম’| সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, সারা বিশ্বের ৮ থেকে ১৭ বছর বয়সী ছেলেমেয়েদের মধ্যে প্রায় ৪০% এই রোগে আক্রান্ত| অতিরিক্ত টিভি দেখা কিংবা মোবাইল ফোনের ব্যবহারের ফলেই এই রোগ বাসা বাঁধছে শিশুদের শরীরে| মানসিক রোগ সনাক্তকরণ এবং তার ব্যাখ্যার আন্তর্জাতিক মনস্তত্ব অভিধানে গত বছর থেকে নতুনভাবে সংযোজিত হয়েছে এই রোগটি|
হাতের লেখা বিশারদ মোহন বসু জানিয়েছেন, শহরের খুদেদের মধ্যে ক্রমশই এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সমস্যা বাড়ছে| ডিজিটাল দুনিয়া এবং বাস্তব দুনিয়া এই দুয়ের মধ্যে স্পিডের মিল খুঁজে পাচ্ছে না খুদের| স্বাভাবিকভাবে বেশি সময় মোবাইলের জন্য অতিবাহিত করার ফলে ডিজিটাল দুনিয়ার স্পিডের সাথেই অভ্যস্থ হয়ে পড়ছে| এর ফলে বাস্তব দুনিয়ার গতি তার কাছে অনেকটাই কম মনে হচ্ছে| জানা গেছে, মোবাইলজাতীয় জিনিসের অতিরিক্ত ব্যবহার কিশোরকিশোরীদের নিউরোট্রান্সমিটারের উপরে অত্যধিক প্রভাব ফেলে| এরফলে মস্তিস্ক মোবাইল বা টিভির হাই স্পিডের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়| এরফলে লেখাপড়া করা এইজাতীয় কম স্পিডের কাজ করার সময় সেই গতির সাথে তাল মেলাতে কষ্ট হচ্ছে তাদের| ফলে লেখার সময় বা পড়ার সময় এক আধটি শব্দ বাদ চলে যাচ্ছে| তাও সম্পূর্ণ অজান্তেই| গতির সাথে তাল মেলাতে না পারায় একমাত্র কারণ জানিয়েছেন চিকিত্সকেরা| জানা গেছে, মোবাইল ব্যবহারের সময় চোখের এবং হাতের মধ্যে যে কো-অর্ডিনেশন তৈরী হচ্ছে তা অন্য কাজ করার সময় হারিয়ে যাচ্ছে| ফলে লেখাপড়ায় সমস্যা হচ্ছে খুদেদের|
সম্প্রতি জানা যায়, কিছু শিশুর বাবামায়ের অভিযোগ তাদের সন্তানেরা হয় একটি গত বাক্য লিখতে পারছে না নাহয় স্কুলের বোর্ড থেকে একটি সম্পূর্ণ বাক্য টুকে আনছে না| কিছু কিছু শব্দ ছেড়ে চলে যাচ্ছে| সেইসব শিশুরা ‘গ্যাজেট ইন্ডিউসড বিহেভিওরাল প্রবলেম’ রোগে আক্রান্ত বলে ধরে নেওয়া হয়েছে| মোবাইলের ব্যবহার কমানোর সাথে সাথে কাউন্সেলিং করানোর পর আবার স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে সেইসব শিশু|