বাড়ির অন্দরমহল থেকে বেরিয়ে যাঁরা নিজের স্বকীয়তায় নিজের পরিচয় তৈরী করতে পেরেছেন, বিজ্ঞানের জটিল অনুসন্ধানে নিজেদের অবদান রাখতে পেরেছেন, তাঁদের এবারে পুরস্কৃত করতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সারা জীবনের কাজের জন্য ১১ জন ভারতীয় মহিলা বিজ্ঞানীকে সম্মান জানাতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে নির্বাচিত ১১ জন বিজ্ঞানীর নামে 'চেয়ার প্রফেসর' পদ চালু করে তাঁদের কাজকে স্বীকৃতি দিতে চাইছে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রক। এই ১১ জন মহিলা বিজ্ঞানীর মধ্যে ৩ জন বাঙালি বিজ্ঞানীও রয়েছেন। এছাড়াও রয়েছেন ১ জন বাঙালি ঘরের গৃহবধূ।
উল্লেখ্য, ১৮৮৬ সালে কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে স্নাতক হয়ে দেশের প্রথম মহিলা চিকিৎসক হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন ডঃ কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়। আবার ১৯৪৪ সালে ভারতের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট অফ সায়েন্স পেয়েছিলেন অসীমা চট্টোপাধ্যায়। ১৯৪৯ সালে বিভা চৌধুরী দেশের প্রথম মহিলা বিজ্ঞানী হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ-এ। কিন্তু সে সময়ে গুটিকতক মহিলাই এগিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছিলেন সমাজের মূল ধারার সঙ্গে। বাকি আম জনতার কাছে মহিলারা ছিলেন সেই অন্দরমহলেরই পুরবাসিনী। ধীরে ধীরে সময় এগিয়েছে। আজ একবিংশ শতকে দাঁড়িয়ে মহিলারা পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে চলেছেন সমাজের যে কোন ক্ষেত্রে, চাকরির যে কোনও বাজারে। এর জন্য যেমন প্রয়োজন হয়েছে বাড়ির আরও উদার মানসিকতা এবং সাহায্যের হাত, তেমনি প্রয়োজন পড়েছে সমাজের তথা সরকারের সাহায্য। তবেই আজ গোটা বিশ্বের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভারতের মহিলারা এগিয়ে চলেছে জেট গতিতে।
সম্প্রতি ২৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় বিজ্ঞান দিবসে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাঁদের নামে 'চেয়ার প্রফেসর' চালু করার কথা ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রক। আগামী ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক মহিলা দিবস। সেই কথা মাথায় রেখে দেশের মহিলা বিজ্ঞানীদের সম্মানিত করতেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে। এই সম্মান স্বীকৃত প্রাপকেরা হলেন অর্চনা শর্মা (কোষ জিনতত্ব), দর্শন রঙ্গনাথম (জৈব রসায়ন), অসীমা চট্টোপাধ্যায় (রসায়ন), ডঃ কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায় (চিকিৎসক), আন্না মনি (আবহাওয়া বিজ্ঞান), রাজেশ্বরী চট্টোপাধ্যায় (ইঞ্জিনিয়ার), জানকি আমাল (উদ্ভিদ বিজ্ঞান), রমন পরিমালা (গণিতজ্ঞ), ইরাবতি কারভে (নৃতত্ত্ব বিজ্ঞান), বিভা চৌধুরী (পদার্থবিজ্ঞান) এবং কমল রণদিভে (মেডিসিন)। এদের মধ্যে এ’রাজ্য থেকে যাত্রা শুরু করে পরবর্তী ক্ষেত্রে দেশ-বিদেশে নিজেদের বিজ্ঞান গবেষণার পরিচয় রেখেছিলেন কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়, অসীমা চট্টোপাধ্যায় এবং বিভা চৌধুরী। পাশাপাশি বাঙালি গৃহবধূ হিসেবে রাজেশ্বরী চট্টোপাধ্যায়ও তাঁর কাজের ক্ষেত্রে বহু অবদান রেখে গিয়েছিলেন।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রক সূত্রে আরও জানা গেছে, দেশের বর্তমান এবং নতুন প্রজন্মের যে সমস্ত বিজ্ঞানীরা সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলির ক্ষেত্রে গবেষণা করে চেয়ার প্রফেসর পদ পাবেন, তাঁদের পরবর্তী গবেষণার ক্ষেত্রে এক কোটি টাকা করে দেবে কেন্দ্রীয় সরকার।
On National Science Day, @MinistryWCD is pleased to announce Establishment of 11 Chairs in the names of Indian Women Scientists at Institutes across the country. Under PM @narendramodi Ji's leadership, we're committed to recognize & encourage Indian women in the field of science. pic.twitter.com/XY4Ys7niSO
— Smriti Z Irani (@smritiirani) February 28, 2020