দেশের মেডিকেল স্টোরগুলিতে এতদিন ২.৫০ টাকায় পাওয়া যেত স্যানিটারি ন্যাপকিন। মহিলাদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে নয়া সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। মাত্র ১ টাকার বিনিময়ে এবার থেকে পাওয়া যাবে স্যানিটারি ন্যাপকিন।
স্যানিটারি প্যাড সম্বন্ধে সম্যক জ্ঞান না থাকায় অনেক গ্রামীণ এলাকাতে মহিলারা এখনও ঋতুকালে কাপড় ব্যবহার করে থাকেন, আর এতে ফল হয় মারাত্মক। এই সময়ে কাপড় বা অন্যান্য অস্বাস্থ্যকর দ্রব্য ব্যবহার মহিলাদের বিপদের মুখে ঠেলে দেয়। কাকে বলে স্যানিটারি ন্যাপকিন, কিভাবেই বা তা ব্যবহার করতে হয়, দেশের জেলা ও গ্রামীণ স্তরের অধিকাংশ অঞ্চলের মহিলাই এখনও সে সম্বন্ধে অজ্ঞাত। এছাড়াও সমীক্ষায় দেখা গেছে, স্যানিটারি ন্যাপকিন সম্বন্ধে জ্ঞান থাকলেও অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতার কারণে পয়সা বাঁচাতে তারা ন্যাপকিনের বদলে কাপড় ব্যবহার করেন।
ভারতের গ্রামীণ অঞ্চলগুলিতে ২৩ শতাংশ কিশোরী ‘পিরিয়ডস্’-এর কারণে স্কুল ছেড়েছে। ন্যাশনাল হেলথ্ সার্ভের চতুর্থ দফার সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, গ্রামীণ ভারতে আজও মাত্র ৪৮.২ শতাংশ মহিলারাই স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করেন।
সরকারি তথ্যানুযায়ী গত বছর জনঔষধী কেন্দ্র থেকে ২.২ কোটি স্যানিটারি ন্যাপকিন বিক্রি হয়েছে। কেন্দ্র সরকারের ১০০ দিনের প্রকল্পে সুলভ মূল্যে মহিলাদের হাতে ন্যাপকিন তুলে দেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে। দাম কমানোর ফলে স্যানিটারি প্যাড বিক্রির পরিমাণ দ্বিগুণ হবে, এমনটাই মনে করছেন কেমিক্যাল ও ফার্টিলাইজার মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী মনসুখ মান্ডভিয়া।
যদিও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দাম কমালেই শুধু চলবে না, ভারতবর্ষের প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে স্যানিটারি ন্যাপকিন সম্বন্ধে সচেতন করতে হবে মহিলাদের। তাদের বোঝাতে হবে, এই সময় কাপড় ব্যবহার করা কতটা ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। পাশাপাশি অনেকে মনে করছেন কেন্দ্রীয় যোজনায় বিনামূল্যে মহিলাদের ন্যাপকিন প্রদান করা উচিত, এতে মহিলারাও প্রবলভাবে উৎসাহিত হবে এবং ন্যাপকিন সম্বন্ধে তাদের মধ্যে সচেতনতাও দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।
তবে দাম কমানোর ফলে স্যানিটারি প্যাড ক্রয় করা এখন অনেকটাই সহজ হয়ে উঠবে। বায়োডিগ্রেডেবল এই ন্যাপকিন ‘সুবিধা’ ব্র্যান্ড নামে চারটি প্যাকে বিক্রি হবে। দেশের মোট ৫,৫০০টি মেডিকেল স্টোরে সুলভ মূল্যে সংগ্রহ করা যাবে এই ন্যাপকিন।