ক্যামেরা কি বলছে

যেখানে বাঘের ভয়, সেখানেই সন্ধ্যে হয়। যেই জায়গার ওপরে ভরসা করেই সমস্ত অসামাজিক কাজকর্মের বিচার হবে, সেখানেই গলদ। আমরা যে কোনো কাজ করার সময় যদি একটু দূরদর্শীতার পরিচয় না দিই, তাহলে আমাদের কাজ করার ক্ষেত্রে হোঁচট খেতেই হবে। তা আরেকবার প্রমাণিত হল।

  রাজ্যের বিচার বিভাগ এবং পুলিশ বিভাগ অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। যে কোনো বিচারের ক্ষেত্রে পুলিশ বিভাগের সহযোগিতা না থাকলে বিচার বিভাগের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে বিচার পদ্ধতি এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। বেশ কিছুদিন থেকেই বিচার বিভাগের তরফে কোনো মামলার ক্ষেত্রে যখন পুলিশ বিভাগের বিশেষ করে থানার ভিডিও ফুটেজ চাইছে আদালত, থানা তা দেখাতে পারছেনা। ফলে আদালতের ক্ষেত্রে সেই বিষয় নিয়ে অসন্তোষ জানানো হচ্ছে। এই রকম সমস্যা বেশ কিছুদিন থেকেই হয়ে আসছে। আসলে, বিভিন্ন মামলায় আদালত, থানায় থাকা ক্যামেরার ফুটেজ চায়। থানার কাজকর্ম কেমন হচ্ছে অথবা অভিযোগকারীর সঙ্গে কোনও রকম দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে কি না তা বোঝা যাবে ওই ক্যামেরায় থাকা ফুটেজের মাধ্যমে। দেখা যাচ্ছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা দিতে পারছেনা থানা। উল্টে তারা জানাচ্ছে, থানার ক্যামেরায় বেশিদিনের ফুটেজ সংরক্ষণ করার ক্ষমতা নেই। ফলে বিভিন্নভাবে অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে। এই পরিস্থিতি কেন তৈরী হচ্ছে তা খতিয়ে দেখতে গিয়ে দেখা গেল, রাজ্য পুলিশের আওতায় থাকা সমস্ত থানাতেই সিসি ক্যামেরা রয়েছে। এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চলের থানাতেও তা রয়েছে। সেগুলি দেখভালের জন্য প্রতিটি থানাতেই একজন করে পুলিশ রয়েছে। ফুটেজ বিশ্লেষণ ও সংরক্ষরণের দায়িত্ব দেওয়া থাকে তার ওপরেই। কিন্তু তাহলে সমস্যা কোথায় হচ্ছে? আরও খতিয়ে দেখার পর জানা গেল, যে ক্যামেরাগুলি থানাতে রয়েছে, সেগুলিতে ১০দিনের ফুটেজ সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। কোথাও কোথাও আবার তাও নেই। নাম কা ওয়াস্তে ক্যামেরা চলছে। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা। ঠিকমতো পরিকল্পনা করে ক্যামেরাগুলি না কেনার ফলেই এই রকম অব্যবস্থার মধ্যে পড়তে হয়েছে থানাগুলিকে।

   তাই এখন আবার নতুন করে সমস্ত থানায় ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরের আধুনিকীকরণের টাকায় উন্নত প্রযুক্তির ক্যামেরা কেনা হচ্ছে। এর জন্য খরচ হচ্ছে সওয়া তিন কোটি টাকা। নবান্ন থেকে এই বিষয়ে অনুমতি পাওয়া গেছে। উক্ত ক্যামেরাগুলিতে ৩০ দিনের ফুটেজ এবং ভিডিও সংরক্ষণ করে রাখা যাবে। সংগে থাকছে অন্যান্য সুবিধাও। যাতে তদন্ত চালানোর ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা না হয়। রাজ্যের ৫৪৫টি থানাতেই তা বসানো যাবে।

 

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...