ঘুমের মধ্যে হঠাৎ করেই ঝাঁকুনি, কারণ কী জানেন?

ঘুমের মধ্যে হঠাৎ করেই ঝাঁকুনি! মনে হল যেন সিঁড়ি থেকে খুব জোরে পড়ে যাচ্ছি! এমন অভিজ্ঞতা সকলেরই কম বেশি আছে। এই পতন অনুভব করাকে বলা হয় হিপনিক জার্ক। আসলে হিপনিক জার্ক হল শরীরের সব বা বেশিরভাগ পেশির অ-স্টেরিওটাইপড মায়োক্লোনিক সংকোচন যা ঘুমের মধ্যে বা তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় ঘটে থাকে। এই অনুভবটা ছিটকে যাওয়া, মহাকাশ দিয়ে পড়ে যাওয়া, বৈদ্যুতিক শক ইত্যাদির মতো অনুভূত হয়। হ্যালুসিনেশন বা কোনও স্বপ্নের সঙ্গেও হতে পারে এই ঝাঁকুনি। প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ জীবনে একবার হলেও এই হিপনিক জার্ক অনুভব করে থাকেন এবং ১০ শতাংশ মানুষ সাক্ষী থাকেন প্রতিদিন। তবে মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে এই সমস্যা প্রবণতা সবচেয়ে বেশি।

তবে এটি কোনোরকমের স্নায়বিক সমস্যা সৃষ্টি করে না। এটি মূলত অনিদ্রা, উদ্বেগ, নিকোটিন, ক্যাফেইন, সন্ধ্যার কঠোর পরিশ্রম, ক্লান্তি ইত্যাদি থেকে হয়ে থাকে। হিপনিক জার্ক সুস্থ মানুষের যখন তখন হয়ে থাকে। তবে এই তীব্র ঝাঁকুনি কিছু ব্যক্তির মধ্যে উদ্বেগ ও অনিদ্রার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

হিপনিক জার্ক-এর সঙ্গে অস্থির লেগ সিন্ড্রোম, অঙ্গপ্রত্যঙ্গের চলাচলের ব্যাধি, ঝাঁকুনিপূর্ণ পায়ের কম্পন, রিদমিক মুভমেন্ট ডিসঅর্ডার ইত্যাদিকে মিশিয়ে ফেললে চলবে না। তবে কিছু বিষয় অন্যান্য সমস্যা থেকে এই ঝাঁকুনিকে আলাদা করতে পারে। যেমন মায়োক্লোনিক খিঁচুনিতে বা মৃগীরোগে জিভে কামড় পড়া, মুখ থেকে গ্যাঁজা বেরনো, মূত্রনালীর অসংযম ইত্যাদি হয়ে থাকে। আর হিপনিক জার্ক শুধুমাত্র ঘুমের শুরুতে ঘটে থাকে এবং এতে ইইজি স্বাভাবিক ও একই থাকে।

এই হিপনিক জার্ক থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য নিকোটিন বা ক্যাফেইনের মতো উত্তেজক নেশাজাত দ্রব্যের ব্যবহার কমানো প্রয়োজন। এছাড়া ঘুমাতে যাওয়ার আগে শারীরিক পরিশ্রম করা বন্ধ করতে হবে এবং পর্যাপ্ত পরিমানে ম্যাগনেসিয়াম খেতে হবে। তবে কিছু ওষুধ আছে যা এই হিপনিক জার্ককে কমাতে সাহায্য করে থাকে। যেমন ঘুমানোর সময় কম ডোজের ক্লনাজেপাম ধীরে ধীরে এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। বিজ্ঞানীরা এখনও কোনও নির্দিষ্ট কারণ বের করতে পারেননি, গবেষণা চলছে এখনও। এই সমস্যা ব্যাখ্যা করে বেশ কয়েকটি তত্ত্ব তৈরির চেষ্টা করলেও নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পোঁছাননি গবেষকরা।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...