সপ্তাহ খানেক আগে থাকতেই তোড়জোড় শুরু। দোকান সেজে উঠছে নতুন রঙে। হালখাতা খোলার হিসাবে মগ্ন বাড়ির কর্তা কর্ত্রী। স্কুল ছুটি। সকাল থেকেই পরিকল্পনা কোন দোকানে আছে নতুন মিষ্টির সমাহার। বিকালে দোকানে দোকানে ঢু। নেই কাল বৈশাখীর শীতল আঁচে নতুন দিনের উপহার। নতুন ফসল ফলার ঘণ্টা বাজত আকাশে। আর আজ সেই শুকনো ক্ষেত খুঁজে বেড়াচ্ছে তাঁর চাষীর কঠিন হাতের পরশ।
কিন্তু এবারের নববর্ষ নতুন কলেবরে হাজির হল। সেখানে নেই জমা কাপড়ের দোকানে দর হাকাহাকি। নেই শোরগোল, আড্ডা, কবিতা আর নতুন গান। কিন্তু বাঙালির কৃষ্টিকে থামাতে পেরেছে, এই ক্ষমতা কার সাধ্যি! সামাজিক মাধ্যমকে হাতিয়ার করেই চলছে শুভেচ্ছা বিনিময়। সুরভিত হচ্ছে নতুন গান, কবিতা আর গল্প। বাড়ি থেকেই তৈরি হচ্ছে চলচ্চিত্র। চলছে অসহায় মানুষের সেবা।
পৃথিবী জুড়েই ত্রস্ত মানবজাতি। বাইরে বেরোলেই মৃত্যু ভয়। এভাবেই বাঙালি স্বাগত জানালো তাঁর নতুন বছর কে। এক অজানা মারণ ভাইরাস থামাতে পারেনি নতুনের অঙ্গীকার। তবুও বাঙালি কি স্বপ্নেও কল্পনা করেছিল এমন একটা নতুন বছর! যুদ্ধ, মন্নন্তর, মহামারি বাঙালি আগেও দেখেছে। ফিকে হয়ে যায়নি লাশের স্তূপ এর উপর বসে থাকা চিল শকুনের শ্যেন দৃষ্টি। তা বলে কি আর থেকে থাকে নতুনের উদযাপন। এই নববর্ষে আবারও এক আকাশের নিচে মিলিত হওয়ার স্বপ্নরা ডানা পাক ওড়ার।