সম্প্রতি বিশ্ব জুড়ে যেভাবে ঘন ঘন আবহাওয়া পরিবর্তনের ঘটনা ঘটছে, তা নিয়ন্ত্রণে আনতে রীতিমতো বেগ পেতে হচ্ছে বৈজ্ঞানিকদের। পাশাপাশি স্থানীয় অর্থনীতি ও খাদ্যসুরক্ষা একই সঙ্গে নিশ্চিত করা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে। এই অবস্থায় গোটা পৃথিবীকে নতুন দিশা দেখাতে চলেছে বলিভিয়া।
বলিভিয়াকে সম্পূর্ণভাবে খাদ্য স্বনির্ভর দেশে পরিণত করতে ছোটো ও মধ্যমানের কৃষকদের খাদ্য উৎপাদন খাতে ৪০ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে বলিভিয়া সরকার। গ্রামীণ কৃষি উন্নয়নের উপমন্ত্রী মারিসল সোলানো বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই সারা দেশে অন্তত ২০টি খাদ্যসুরক্ষা প্রকল্পের কাজ চলছে। আলু, টোম্যাটো, গম, শাকসবজি, কফি, কোকোর মতো খাদ্যশস্যের পাশাপাশি পশুপালন ও মৎস্য চাষের ক্ষেত্রেও অর্থ ব্যয় করা হয়েছে।
কৃষিকার্য ও পশুপালনের মতো স্থানীয় জীবিকাগুলির উপর ভিত্তি করেই ২০২০ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ খাদ্য স্বনির্ভর দেশে পরিণত হওয়ার দিকে পা বাড়াচ্ছে বলিভিয়া। ২০১৪ তে পেশ করা একটি রিপোর্ট বলছে, গত কয়েক বছরে বলিভিয়ায় খাদ্য উৎপাদনের হার প্রায় ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বলিভিয়া সরকারের লক্ষ্য ছিল আগামী বছরগুলিতে এই হার আরও বৃদ্ধি করার, আর বলাই বাহুল্য সেখানেও পূর্ণমাত্রায় সফল হয়েছে এই খাদ্য অভিযান। এই মূহুর্তে লক্ষ্যের খুব কাছাকাছি অবস্থান করছে বলিভিয়া।
অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি কমিয়ে আনলে এবং তা বন্ধ করলে শুধু কৃষকদের জীবিকার উন্নতিসাধনই হবে না, ভালো ব্যবসার পাশাপাশি ক্ষুধা, বেকারত্ব ও দারিদ্র থেকেও মুক্তি পাবে একটা গোটা দেশ।
মানবজাতির বিবর্তনের মূল কারণই ছিল কৃষিকার্য ও পশুপালন। মূলত এই দুটি জীবিকার উপর ভিত্তি করেই ধীরে ধীরে গড়ে উঠেছিল সভ্যতা। শুধু বলিভিয়া নয়, সমগ্র বিশ্ব যদি একইভাবে এই ধরণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে সক্ষম হন, তবেই সৃষ্টি হবে বেঁচে থাকার নতুন পথ। সবুজ জমির উপর নির্ভর করে আবহাওয়া পরিবর্তন মোকাবিলার পাশাপাশি দারিদ্র, ক্ষুধাকে পিছনে ফেলে এক নবমাত্রায় উন্নীত হবে গোটা পৃথিবী।