ভোটের পারদ এবং গরমের পারদ পাল্লা দিয়ে চড়ছে। এ বলে আমায় দেখ, তো ও বলে আমায় দেখ- এই হচ্ছে গল্প। তবে ভোট প্রায় শেষের পথে। গরম কমার কোনো লক্ষণ নেই। ঘূর্ণিঝড় 'ফনি'র আগমন বার্তা থাকলেও তার প্রভাব যে কেমন হবে তা পরিলক্ষিত হবে পরেই। তাই সেইদিকে না তাকিয়ে আমরা বরঞ্চ একটু অন্য দিকে তাকাই। নির্বাচনবিধির কারনে কিছু কিছু কাজ আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। তার মধ্যে গঙ্গারামপুরের বুলেট ট্রেনও রয়েছে। গঙ্গারামপুরের কালদীঘি পার্ক-এ ছুটবে বুলেট ট্রেন। পুরসভা সূত্রে জানা গেছে, ১ কোটি ২ লক্ষ টাকা খরচ করে হায়দ্রাবাদ থেকে ট্রেনটি আনা হয়েছে। মার্চ মাসেই ট্রেনটি চালু করার পরিকল্পনা ছিল কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় তা বাতিল করতে হয়।
ট্রেনটি চালু না হলেও কালদীঘি পার্কের ভেতরে চারদিকে বসানো লাইনে ট্রেনটি পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হচ্ছে। গঙ্গারামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান প্রশান্ত মিত্র জানান, কালদীঘি পার্কটি নতুন করে সাজানো হচ্ছে। সেখানে বুলেট ট্রেন চলে এসেছে। আদর্শ নির্বাচনবিধি কেটে গেলেই জেলাবাসীকে নতুন রূপে সাজানো কালদীঘি পার্ক উপহার দিতে চায় পুরসভা। প্রায় পাঁচ কিমি এলাকা জুড়ে ৩০ মিনিট ধরে ঘুরবে বুলেট ট্রেনটি। ট্রেনটি সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত কয়েকমাস ধরেই গঙ্গারামপুর পুরসভা কালদীঘি পার্ক সাজাচ্ছে। সেখানকার ঝিলটি সংস্কার করে বোটিং-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওয়াটার বল নিয়ে আসা হয়েছে পার্কটিতে। ঐতিহাসিক কালদীঘির চারদিকে পাঁচ কিমি এলাকায় কয়েক মাস আগেই লাইন পাতা হয়েছে। হায়দ্রাবাদ থেকে ইঞ্জিন সহ চারটি কামরা নিয়ে আসা হয়েছে। ট্রেনটি আক্ষরিক অর্থে বিনোদনের জন্য হলেও দ্রুতগামী বুলেট ট্রেনের ধাঁচে তৈরী করা হয়েছে বলে এর নাম দেওয়া হয়েছে বুলেট ট্রেন। ট্রেনটির তিনটি কামরা রয়েছে। যদিও সেগুলি শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কামরা নয়, পুরসভার দাবি, পর্যটকদের চাহিদা বাড়লে পরবর্তীতে কামরার সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি এসি বগিও জোড়া হবে। আধুনিক কামরাগুলিতে মোবাইল চার্জিং পয়েন্ট যেমন রয়েছে, তেমনি আধুনিক সুবিধাসম্বলিত স্বাস্থ্যসম্মত বুলেট-এর বন্দোবস্ত রয়েছে। যে কোনো বয়সের মানুষ এই ট্রেনে চড়তে পারবেন। ট্রেনে চড়ার জন্য যাত্রীদের মেট্রো রেলের মতো টিকিট কিনতে হবে। শিশু কিংবা বয়স্ক সবার ক্ষেত্রেই পুরসভা আপাতত টিকিটের একই দাম রাখবে। যদিও টিকিট মূল্য এখনও ধার্য করা হয়নি। গোটা পাঁচ কিমি যাত্রাপথে তিনটি স্টেশন করা হয়েছে। বুলেট ট্রেনে উঠলে যাত্রীরা রবীন্দ্রসংগীত শুনতে পাবেন। পুরসভা কর্তৃপক্ষ কালদীঘি চত্বরেই পিকনিক স্পট নির্দিষ্ট করেছে। যে কেউ সেখানে চাইলে পিকনিক করতে পারবেন। স্পটটিকে নতুন করে সাজানোর কাজ চলছে। পুরসভার আশা, এভাবে কালদিঘিতে পর্যটকের সংখ্যা বাড়বে এবং দফতরের নিজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পাবে।