ধনতেরসে কেন সবাই ঝাঁটা- ঝাড়ু কেনে?

হিন্দু বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী, কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশীতে পালিত হয় ধনতেরস৷ দীপাবলি ও কালীপুজোর আগে সোনা, রূপার মতো দামী ধাতু, গহনা থেকে শুরু করে বাসন কিনতেও দোকানের সামনে পড়ে লম্বা লম্বা লাইন। মূলত উত্তর ভারতের উৎসব হলেও এখন গোটা দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে।

ধনতেরসের পুজোর জন্য সূর্যাস্তের পর প্রদোষ কাল সবচেয়ে শুভ মুহূর্ত ধরা হয়।  এ বছর ধনতেরস উত্‍সব পালিত হবে ১০ নভেম্বর, শুক্রবার। বেলা ১২.৩০ মিনিটে পড়ছে শুভমুহূর্ত। শেষ হবে ১১ নভেম্বর, শনিবার , বেলা ১টা ৫০ মিনিটে। এবছর প্রদোষের পুজোর জন্য শুভ সময় ১০ তারিখ বিকেল ৬ টা ২০ থেকে রাত ৮ টা ২০ পর্যন্ত।

যার যেরকম রেস্ত, গৃহের কলত্যাণের জন্য সেই অনুযায়ী জিনিস কেনেন গৃহস্থরা। গহনা, সোনা রুপোর কইয়েনের পাশাপাশি এদিন ধাতুর তৈরী দেবদেবীর মূর্তি কেনারও চল দেখা যায়। তবে সে সব ছাপিয়ে ভিড় নজর কাড়ে ঝাড়ু-ঝাঁটার দোকানে। নানা মাপের  ও সাইজের ঝাঁটা কেনার উৎসাহ চোখে পড়ে।

পাড়ার দোকান থেকে শপিংমল- ঝাঁটার চাহিদা চরমে ওঠে বছরের এই একটা দিন। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন জাগে ধনতেরাসের দিন ঝাঁটার এমন চাহিদার কারণ কী?

মৎস্যপুরাণ অনুযায়ী ঝাঁটাকে লক্ষ্মীর প্রতীক মনে করা হয়। বৃহৎ সংহিতা অনুযায়ী, ঝাঁটা সুখ-শান্তি বৃদ্ধি করে ও দুষ্ট শক্তির সর্বনাশ করে। এ দিন বাড়িতে নতুন ঝাঁটা দিয়ে ঘর পরিষ্কার করলে ঋণমুক্তি সম্ভব।

পুরাণকাহিনি অনুযায়ী, দ্রৌপদী-অর্জুনের বিয়েতে বাধা সৃষ্টি হওয়ায় কৃষ্ণ   একটি উপায় বার করেছিলেন। এর পর ঝাঁটা দিয়ে বাড়ি পরিষ্কার করা হয়েছিল। মনে করা হয় এর পর দ্রৌপদী-অর্জুনের বিয়ে হয়। ঝাঁটার সাহায্যে শক্তিলাভ ও ধনাঢ্য হওয়ার গল্প শুনিয়ে ছিলেন।

বাড়িতে ঝাঁটা রাখার কিছু নিয়ম মেনে চলেন গৃহস্থরা। ঝাঁটা সব সময় শুইয়ে রাখতে হয়। কখনও সোজা দাঁড় করিয়ে রাখা উচিত নয়। মনে করা হয়, ঝাঁটাকে দাঁড় করিয়ে রাখলে শত্রু বাধা উৎপন্ন হয়। এ জন্য ঝাঁটাকে শুইয়ে ও লুকিয়ে রাখা উচিত।

মনে করা হয় ধনতেরাসের দিন ঝাঁটা কিনলে গৃহে অচলা হন লক্ষ্মী। সব অশুভ দূর হয় ঝাঁটাতে। সুখ, সমৃদ্ধিতে ভরে ওঠে ঘর। ধনতেরসে লক্ষ্মীকে প্রীত করতেই ঝাড়ু বা ঝাঁটা কেনার চল রয়েছে। নতুন ঝাড়ু বাড়ি এনে নির্দিষ্ট মুহূর্তে পুজো করতে হয়। অনেকে ঝাড়ু দানও করেন মন্দিরে  

  • ট্যাগ

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...