নজর স্বাস্থ্যে

অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দ্বিতীয় হুগলী সেতু রক্ষণাবেক্ষণে ২০০ কোটি টাকা নয়া বিনিয়োগ করবে রাজ্য সরকার।

 বিদ্যাসাগর সেতু কতটা মজবুত আছে তা জানতে কেবল সেন্সর বসানো হবে। হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনারস বলেছে,  টেন্ডার প্রক্রিয়ার কাজ শেষ হলেই সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ শুরু হবে।

  ট্রাফিক চাপের জন্য বেশ কয়েক বছর ধরেই বিদ্যাসাগর সেতু স্বাস্থ্য নিয়ে নানা মহলে নানা রকম আলোচনা ও আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল।

 এক বছর ধরে পরীক্ষা করে একটা রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। ব্রিজের উপদেষ্টা সংস্থা রেন ইন্ডিয়া টেকনিক্যাল ইকনমিক সার্ভিস জানিয়েছে এই মুহূর্তে সেতু স্বাস্থ্য নিয়ে আশঙ্কা না থাকলেও ভবিষ্যতের কথা ভেবে এখন থেকেই বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই তৈরি করা হয়েছে প্রকল্পের রিপোর্ট। দ্বিতীয় হুগলি সেতুর ১৫২ টি কেবলের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে কেবল বদলানোর প্রস্তাব আনা হয়। দুপাশের লেন বন্ধ রেখে ব্রিজের কাজ করা হবে।

দু’পাশে সেতুর স্তম্ভের ভিতর পর্যন্ত ছড়িয়ে থাকা ১৬টি হোল্ডিং-ডাউন’ কেব‌্‌লও বদল করা হবে।

তবে ব্রিজের কাজ চলার সময়ে মানুষকে বড় অসুবিধায় যাতে না পড়তে হয় সে দিকে খেয়াল রাখা হবে। কাজ চলা কালীন কয়েক ঘন্টার জন্য হয়তো যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ হতে পারে। তবে যানজটের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। প্রভাব পড়বে সংলগ্ন অঞ্চলের যান চলাচলেও। মুখ্যমন্ত্রী সহ ভিআইপি-দের ব্যবস্থা কী হবে, তা নিয়ে চিন্তায় পুলিশ।

 এশিয়ার দীর্ঘতম ঝুলন্ত সেতু গুলির মধ্যে অন্যতম বিদ্যাসাগর সেতু। এই সেতু নির্মাণ করতে ব্যয় হয়েছিল ৩৮৮ কোটি টাকা। বিদ্যাসাগর সেতুর ভিত হুগলী নদীর ১০০ মিটার গভীরে অবস্থিত।

বিদ্যাসাগর সেতু কেবল-স্টেইড বা ঝুলন্ত সেতু। এর বিস্তার ৪৫৭ মিটারের কিছু বেশি এবং ডেকের প্রস্থ ৩৫ মিটার।

এই সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ১৯৭৮ সালে এবং সেতুটির উদ্বোধন হয় ১৯৯২ সালের ১০ অক্টোবর, মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু এবং প্রধানমন্ত্রী নরসীমা রাওয়ের উপস্থিতিতে। ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রয়াণ শতবর্ষে।

 সেতুর তদারককারী সংস্থা হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশন (এইচআরবিসি)। তবে সেতু নির্মাণ করেছিল বিবিজে নামে ব্রেথওয়েট, বার্ন ও জেশপ নামে তিনটি সংস্থার একটি যৌথ গোষ্ঠী। ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দের ২০ মে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি এই সেতুর শিলান্যাস করেন। সেতুটির নকশা করেছিল শ্লেইচ বার্গারম্যান অ্যান্ড পার্টনার, নকশা পরীক্ষা করে ফ্রিম্যান ফক্স অ্যান্ড পার্টনার ও বৃহৎ শিল্প নিগম লিমিটেড। সেতুটি নির্মাণ করে গ্যামন ইন্ডিয়া লিমিটেড।

গত কয়েক বছরে হাওড়া ব্রিজের বিকল্প এই সেতু দিয়ে যান চলাচল প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। রাজ্যের প্রশাসনিক সদর দপ্তর মহাকরণ থেকে হাওড়ার নবান্নে সরে যাওয়ার পর এই সেতুর গুরুত্ব আরও বেড়ে গিয়েছে। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে যান চলাচলও। যত দিন যাচ্ছে আরও বাড়ছে। 

তার জন্যও সেতুর হাল ফেরানোতে জোর নজর। ঝুঁকি নিতে রাজি নয় প্রশাসন। মাঝের হাটের ঘা এখনও দগদগ করছে রাজ্যবাসীর স্মৃতিতে।

২০১৭ সালে বিদ্যাসাগর সেতুর সংস্কারের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল ১০০ কোটি টাকা। এই বছর ২০০ কোটি। 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...