স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন বিভিন্ন বয়সী নারীরা। বিশেষত সঠিক সময়ে স্তন ক্যান্সার নির্ণয় না করে ওঠার ফলে সঠিক চিকিৎসা ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছেনা সঠিক সময়ের ভিতর। ৩০ থেকে ৪০ বছরের নিচেও লক্ষ্য করা যাচ্ছে স্তন ক্যান্সার এর লক্ষণ। ব্রেস্ট ক্যান্সার নির্ধারণ, কাউন্সিলিং, চিকিৎসা এ সব ক্ষেত্রে তুলনামূলক ভাবে পিছিয়ে পড়ছিল দেশ। এ ক্ষেত্রে সাহায্যকারী ভুমিকা রাখতে এসেছে ত্রিচূড়ের সেন্টার ফর মেটেরিয়ালস ফর ইলেকট্রনিকস টেকনোলজি। তারা আবিষ্কার করেছে সি-মেট নামে একটি অন্তর্বাস। যাতে রয়েছে সেন্সর। থার্মাল ইমেজিংয়ের মাধ্যমে স্তন ক্যান্সার এফেক্টেড কোষকে শনাক্ত করার ক্ষমতা থাকবে এই সি-মেট অন্তর্বাসের।
ব্রেস্ট ক্যান্সার নির্ণয়ের জন্য সাধারণত যে পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় তার নাম ম্যামোগ্রাম টেস্ট, যা ৫০ বছরের বেশি বয়স না হলে টেস্ট করা সম্ভব হয় না বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। ম্যামোগ্রাম টেস্টের রেডিয়েশনকে এক্ষেত্রে দায়ী করেন তাঁরা। ম্যামোগ্রাম টেস্টের জন্য ব্যয় হয় ১৫০০ থেকে ৮০০০ টাকা। ব্যয়বহুল টেস্টের জন্য অনেকে টেস্ট করাতে চাননা। এদের কথা মাথায় রেখেই কেরালার একটি বিজ্ঞানী দল এই সমস্যা সমাধানের প্রয়াস করেন। দলটির চিফ ইনভেস্টিগেটিং অফিসার এ. সীমা সম্প্রতি রাষ্ট্রপতির হাত থেকে নারীশক্তি পুরস্কার গ্রহণ করেন।
অন্তর্বাস থেকে স্তন ক্যান্সার নির্ধারণের জন্য যোগ করা হয়েছে থার্মাল ইমেজিং পদ্ধতি। আবিস্কারের পরবর্তী চার বছর পরীক্ষামূলক ভাবে ব্যবহার করা আরম্ভ হয় এই অন্তর্বাসগুলির। চিফ ইনভেস্টিগেটিং অফিসার এ. সীমা জানান, স্তন ত্বকের তাপমাত্রা বিবেচনা করে দেখার ক্ষমতা রাখে অন্তর্বাসের ভিতরে লাগানো সেন্সর। কোন অস্বাভাবিক তাপমাত্রা লক্ষ্য করলে তা ধরতে পারবে এই অন্তর্বাসটি। ত্বকের তাপমাত্রায় নির্ধারক তাই অন্তর্বাস নির্ণয় ব্যবস্থার ফলে থাকছে না রেডিয়েশনের ব্যবস্থা। সহজে বহনযোগ্য। এই অন্তর্বাস পরিধানের সময় জাপা-কাপড় বদলানোর কোনও প্রয়োজন নেই তাই সহজেই রক্ষণশীল পরিবেশেও কাজ করা যাবে সাধারণ অবস্থাতেই।
এই বিশেষ অন্তর্বাসটি সকল বয়সীদের জন্য। যন্ত্রটির দাম বর্মানে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা তবে বাণিজ্যিকীকরণ হলে আগামীতে এর দাম দাঁড়াতে পারে ৫০ টাকা। ২০০ জন সেচ্ছাসেবক এবং ১১৭ জন রোগীর উপর অন্তর্বাসের প্রাথমিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। এবারে শুধু অপেক্ষা বাজারে নিয়ে আসবার। সীমা জানিয়েছেন স্তন ক্যান্সার নির্ধারণ করার অন্তর্বাসটি তৈরির জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত উৎপাদন যন্ত্র তবেই স্বাভাবিক গতিতে বাজারে প্রবেশ করতে পারবে অন্তর্বাসটি। এমন প্রকল্প বাস্তবায়নে যারা অন্তর্বাসটি তৈরিতে কাজ করেছেন তারা হল মুরলীধরন, আরতি কে, রঞ্জিত, দীপক, হাসিনা, ইভা ইগনাসিয়াস, শ্রী লক্ষ। দলটির সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন সানি ও শ্রীধর কৃষ্ণ ।