গত বছর মা হয়েছেন বলি অভিনেত্রী ইলিয়ানা ডি ক্রুজ। পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়ে সকলকে চমকে দিয়েছেন তিনি। প্রথম প্রথম ছোট্ট সন্তানের সাথে অনেক ছবি দিচ্ছিলেন তিনি। তবে, হঠাৎ অভিনেত্রী যেন কোথাও হারিয়ে গেছেন। দীর্ঘদিন তিনি স্ক্রিনে নেই, কোনও খবরও নেই। কেমন আছেন তিনি?
জানা গিয়েছে যে তিনি নাকি ভালো নেই। এক কথায় বললে নিজের সন্তানের জন্মের পর তিনি নাকি এক মারাত্মক রোগের কবলে পড়েছেন। কি হয়েছে তাঁর?
এক সংবাদমাধ্যমে নিজেই খোলসা করে বললেন অভিনেত্রী। তিনি বলেছেন যে ছেলের জন্মের পর থেকেই তাঁর মন খারাপ। সেই মন খারাপ নাকি খুবী মারাত্মক হয়ে উঠেছে। এই মন খারাপ হওয়ার মূল কারণ হল প্রসবোত্তর অবসাদ যাকে ইংরেজিতে ‘পোস্টপার্টাম ডিপ্রেসন’ বলা হয়।
ইলিয়ানা জানিয়েছেন যে মা হওয়ার পর শুধু শরীর নয় তাঁর মনেও একটা পরিবর্তন য়াসে। অনেকে মানসিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন। আর সেই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ছেলের সবকিছু দেখাশোনা করলেও মাঝে মাঝে তিনি অপরাধবোধে ভোগেন।
অভিনেত্রী ইলিয়ানার মনে হয় যে তাঁর ছেলের যত্নে কোথাও যেন কোনও ত্রুটি থেকে যাচ্ছে। সেই ভাবনা আসলেই প্রচণ্ড ভেঙে পড়ছেন তিনি। মনে একটাই জিনিস চলছে যে ছেলের জন্য আর কী কী করলে খানিকটা স্বস্তি পাবেন তিনি।
অভিনেত্রীর এই রোগের ব্যাপারে এক ঘটনা দিয়ে বলছেন যে ‘একদিন ছেলে অন্য ঘরে ঘুমোচ্ছিল। আমি পাশের ঘরে ছিলাম। হঠাৎই আমার ছেলের জন্য প্রচণ্ড মনকেমন করতে লাগল। গলার কাছে কান্না দলা পাকিয়ে উঠছিল। মনে হচ্ছিল কত দিন যেন ছেলেকে দেখিনি। দৌড়ে গিয়ে ওকে দেখার পর শান্তি পেয়েছিলাম।’
তবে, ইলিয়ানা জানিয়েছেন যে এই মানসিক রোগের শিকার হওয়ার পর থেকে তাঁর সঙ্গী মাইকেল সর্বদাই পাশে রয়েছেন।
তবে আপনি কি জানেন এই মানসিক রোগটা আসলে কি? প্রসবোত্তর অবসাদ কী? এই মানসিক রোগটা মহিলাদের মধ্যে সন্তান জন্মানোর পর দেখা যায়। এই সময় তার মনে, শরীরে নানান পরিবর্তন আসতে থাকে। অর্থাৎ হরমোনের ভারসাম্য থাকে না, তাই নানান মানসিক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয় এবং অনেক উল্টোপাল্টা চিন্তা আসে। এী মানসিক রোগটাকেই বলা হয় প্রসবোত্তর অবসাদ।
এই রোগ দেখা দিলে কী কী হয়? জানা গিয়েছে যে এই অবসাদ হলে, আচমকা মেজাজের পরিবর্তন হয়। যেমন হঠাৎ করে কষ্ট পাওয়া, রাগ হওয়া, কারও সঙ্গে কথা বলতে না চাওয়া, বিরক্তি, কান্না পাওয়া, একা থাকতে চাওয়া, আবার অনেক সময় নিজের সন্তানকেই সহ্য করতে না পারা – এইসব লক্ষণগুলোই দেখা যায় অবসাদে ভুগলে। বিশ্বের সমস্ত মহিলাদের মধ্যে থেকে ৭০ শতাংশ মহিলাদের মধ্যে এই সমস্যা দেখা দেয়। এক থেকে দুই মাস পর্যন্ত থাকতে পারে এই অবসাদ। কেউ যদি এমন সমস্যায় পড়ে তাহলে পরিবার ও প্রয়োজনে কাউন্সিলরের পরামর্শ নিতে হবে।