বাদ্য যন্ত্রে সঠিক ভাবে কম্পন সৃষ্টি করে যন্ত্রবাদক যে শব্দশৈলী তৈরী করেন তাকে পারকাশানিস্ট বলা হয়। যন্ত্রে কখনো আঘাত করে , বা চাপড়ে, কখনওবা কেবলই হালকা ঘষে এই রকম শব্দের সৃষ্টি হয় বাদ্য যন্ত্রে। কিন্তু এই শব্দ রাশি যখন শরীরের বিভিন্ন কার্যকলাপ থেকে আসে তখন প্রকাশনের ভূমিকায় থাকে বডি অর্থাৎ শরীর। শরীর থেকে উৎপাদিত বিভিন্ন শব্দরাশি, যার উৎপত্তি হয় কখনো হাতে তালি দিয়ে, গলা -কোমর-গাল বা পায়ের ঊর্ধ্ব অংশে হাতের নির্দিষ্ট চাপড়ে এবং পায়ের তালে। এমন কাজে যিনি দক্ষ তিনি হলেন বডি পারকাশানিস্ট।
সম্প্রতি কলকাতা ঘুরে গেলেন এমনই একজন বডি পারকাশানিস্ট নাওমি জিন। অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসকারী নাওমি জেনের বডি পারকাশানের পারদর্শিতা ছড়িয়ে পড়েছে জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যমগুলোতেও। বডি পারকাশানিস্ট এর সাথে নাওমি একজন অসাধারন বাঁশি বাদক। কলকাতার একটি থিয়েটার গ্রূপ নাওমিকে কলকাতায় পেয়ে আয়োজন করেছিল বডি পারকাশান-এর ওয়ার্কশপ। তাতে যোগ দিয়েছে ৬ বছরের শিশু থেকে ৬০ বছরের প্রৌঢ়। ওয়ার্কশপে যোগদানের উৎসাহ দেখে আপ্লুত নাওমি। তিনি জানান , তাঁর ওয়ার্কশপের বিপুল সাড়া পেয়ে অভিভূত তিনি।
বডি পারকাশানিস্ট নাওমি জিন-এর ওয়ার্কশপে কাঠের মঞ্চে অংশগ্রহণের জন্য অবারিত দ্বার ছিল সকলের জন্য। এই মঞ্চেই সকলকে বৃত্তাকারে বসিয়ে কখনো পায়ে তালি দিয়ে কখনো এক দুই গুনে তালি দিয়ে চলেছে ওয়ার্কশপ। নাওমি জানান, যখন তাঁর মাত্র আট বছর বয়স তখন একটি মিউজিক্যাল ইভেন্টে গ্রেগ শিহানের বডি পারকাশান দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন তিনি। ১৭ বছর বয়স থেকে নিজেই বডি পারকাশান শিখতে শুরু করেন নাওমি। গ্রেগের সাথে পরবর্তীতে বিভিন্ন কনসার্টে অংশগ্রহণ করেন তিনি। সেসব কনসার্টের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে পরিচিত সামাজিক মাধ্যমগুলোতে, কুড়িয়েছে প্রশংসা।
প্রতিটি মানুষের ভিতরের শিশুটিকে বের করে আনতে পারে বডি পারকাশান বলে জানান নাওমি জিন। তিনি বলেন ওয়ার্কশপের শুরুতেই অনেকে তাল মেলাতে ভুল করলেও শেষের দিকে সেই ভুল ঠিক করে ফেলেন তারা|ঠিক লয়ে পা ফেলতে থাকেন অংশগ্রহণকারীরা। এটাই তাঁর সাফল্য হয়ে যায়। বডি পারকাশান দিয়ে নাওমি সৃষ্টির আনন্দ ছড়িয়ে দিতে চান সকলের ভিতরে।