জীবনে চলার পথে বাধার সম্মুখীন হয়না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া বেশ দুষ্কর| বলা হয়, জীবনে চলার পথে সামনে আসে প্রচুর বাধা| আর যে মানুষ সেই বাধা অতিক্রম করতে পারে তারাই সফলভাবে জীবনের পথে এগিয়ে যেতে পারে| নানা ধরনের বাধা আসে জীবনে| কিন্তু জীবনতাই যদি শুরু হয় বাধা দিয়ে? দৃষ্টিহীনতাকে জীবনে চলার পথে বাধা বলেই ধরা হয়| আর সেই বাধা অনেকেই অতিক্রম করতে পারে না| কিন্তু সব প্রতিকুলতাকে ছাপিয়ে গেছিলেন ৩১ বছর বয়সী আইপিএস অফিসার প্রাঞ্জল পাটিল| সারা ভারতের মধ্যে তিনিই ছিলেন প্রথম দৃষ্টিহীন মহিলা আইপিএস|
শুধু তিনি একা নন, দৃষ্টিহীনতার প্রতিবন্ধকতাকে ছাপিয়ে এগিয়ে গেছেন জ্যোত্স্না ফানিজা নামক এক ২৫ বছর বয়সী নারী, যিনি জন্মগত অন্ধ হওয়া সত্ত্বেও তিনি ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ ছাত্রী যিনি পিএইচডি করেছিলেন| এবার সেই তালিকায় নাম লেখালেন ২৩ বছর বয়সী তপস্বিনী দাস| তিনি তাঁর চোখের দৃষ্টি হারান দ্বিতীয় শ্রেণীতে পরার সময়| ২০১৮ সালে তিনি উড়িষ্যা সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় পাস করেন এবং প্রথম প্রচেষ্টাতেই তিনি সফল হন| জানা গেছে, জানুয়ারির ৬ তারিখ এই পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার পর দেখা যায় প্রথম প্রচেষ্টাতেই ১৬১ নম্বর জায়গা দখল করে তপস্বিনী|
তার এই কীর্তির কথা শেয়ার করেছেন স্টেট কমিসনার ফর পার্সনস উইথ ডিসাবিলিটিস, সুলোচনা সেন| তিনি তাঁর ইনসাগ্রাম অ্যাকাউন্টে শেয়ার করেন তপস্বিনীর কথা| জানা গেছে, তপস্বিনীর যাত্রাপথ মোটেও খুব সহজ ছিল না| যাদের চোখে দৃষ্টি রয়েছে তারা স্বাভাবিকভাবেই বই পড়তে পারে| কিন্তু দৃষ্টিশক্তিহীনদের কাছে পড়াশোনা করাটা বেশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়ায়| তপস্বিনী জানিয়েছেন, তিনি বই স্ক্যান করে তার কনটেন্টকে অডিও ফরমাটে ট্রান্সফার করে নিতেন| এরফলে বই পড়ে না পড়া শুনে শুনে মুখস্ত করতেন তিনি| তার বাবা অরুণ কুমার দাস জানিয়েছেন, দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ার সময়েই আঘাতের ফলে তার চোখ নষ্ট হয়ে যায়| এরপর তাকে একটি ব্লাইন্ড স্কুলে ভর্তি করে দেয় তার বাবা| সেখান থেকেই ম্যাট্রিক পাস করে তপস্বিনী| এরপর আর্টস থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেন তিনি| তার বাবা জানিয়েছেন, শুরু থেকেই মেধাবী ছাত্রী ছিলেন তপস্বিনী| সেইকারণেই প্রতিকুলতাকে সাথে নিয়েই এগিয়ে গেছেন তিনি|