মুক্ত আকাশে ওড়ার স্বাধীনতা

যেমন বন্যেরা বনে সুন্দর আর শিশুরা মাতৃক্রোড়ে,  সেরকমই পাখিরা কিন্তু মুক্ত আকাশেই সুন্দর। পাখিকে কোনোভাবেই খাঁচায় আটকে রাখা উচিত নয়। মানুষের মনে এই কথাটি অনেকদিন ধরে ঘুরপাক খেলেও অবশেষে এই কথার উপরে সিলমোহর বসালো দিল্লি হাইকোর্ট। হাইকোর্ট থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পাখিকে খাঁচায় আটকে রাখা 'অ্যানিম্যাল ক্রুয়েলটি' আওতায় পড়ে।

মামলা চলাকালীন অ্যাডভোকেট মনমোহন সিং উষ্মা প্রকাশ করে জানান, কিছু ক্ষেত্রে খাবারের অভাবের কারণে তাদের বাইরে পাচারও করে দেওয়া হচ্ছিলো। বাইরের দেশের লোক তাদের স্টেটাস মেইনটেইন করার জন্য নানাধরণের পোষ্য রেখে থাকেন। সেই দেশে নানা ধরণের একজোটিক পাখিকে ডানার পালক কেটে পোষ্য করে রেখে দেওয়া হয়। এছাড়া এই দেশেও টিয়া, ময়না, চন্দনা প্রভৃতি পাখিকে পোষা হচ্ছিলো। দীর্ঘদিন খাঁচার মধ্যে থাকার ফলে ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে মারা যাচ্ছিলো পাখি। বিভিন্ন এনজিও থেকে শুরু করে নানা সংস্থা এই ব্যাপারে মাথা ঘামালেও শেষ সিদ্ধান্তে কেউ পৌঁছাতে পারেনি। অবশেষে দিল্লি হাইকোর্টের রায়তে খুশি পক্ষীপ্রেমীরা।

এই কেসের বিচারক জানান, পাখিদের মুক্ত আকাশে উড়ে বেড়ানোর মৌলিক অধিকার রয়েছে। তাই ব্যবসার খাতিরে কেউ তাদের খাঁচায় আটকে রাখতে পারবে না। তিনি জানান, ব্যবসার স্বার্থে অনেক পাখি একসাথে একটি ছোট খাঁচায় করে রাখা হয়। ছোট জায়গায় থাকার ফলে সংক্রমণ ঘটে আর অনেকসময়ই সেই পাখি মারা যায়, মারা না গেলেও ক্রেতাদের কাছে সেই অসুস্থ পাখি বিক্রি করে দেওয়ার প্রচেষ্টা করে বিক্রেতারা। এক ব্যক্তির কাছে প্রচুর পাখি পাওয়ার পরেই সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কেস শুরু হয়। কেস চলাকালীন হাইকোর্ট এই ব্যাপারে বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ করে। এরপরই তৎক্ষণাৎ কিছু পাখিকে মুক্তি দেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত বলবৎ হয়েছিল একটি পশুপ্রেমী সংস্থার করা কেসের জন্যেই। তারাই প্রথম পাখিদের খোলা আকাশে উড়িয়ে দেওয়ার দাবি তোলে।

পাখিদের মুক্ত আকাশে ফেরাতে উদ্যোগী সকলে সাধুবাদ জানিয়েছেন হাইকোর্টের এই সিদ্ধান্তকে। তারা চান, যত দ্রুত সম্ভব বন্ধ হোক পক্ষী কারবার। সত্যিই যদি কোনোদিন এই ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায় তাহলে ভবিষ্যতে আবারও দেখা যেতে পারে আকাশের বুক চিরে ঝাঁক বেঁধে উড়ে চলা টিয়ার দলকে....

 

 

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...