শীত পড়ার আগেই ঝিল পরিষ্কার করার ফল মিললো হাতেনাতে | গত বছরের তুলনায় দ্বিগুন সংখ্যক পাখি ফিরে এলো হাওড়ার সাঁতরাগাছি ঝিলে| শীত পড়ার ঠিক মুখে মুখে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের ফলে কচুরিপানার দ্বীপগুলো তছনছ হয়ে গিয়েছিল | তাই দেশ বিদেশ থেকে কত অতিথি এসে উপস্থিত হবেন সে নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন ছিলেন পক্ষীপ্রেমিক ও পরিবেশবিদরা |এছাড়াও ছিল ঝিলের পাড় জবরদখল ও জলদূষণের মত সমস্যা| তাদের সেই আশংকা দূর করে দেরিতে হলেও এসে পৌঁছেছেন শীতের অতিথিরা | সংখ্যায়ও প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি |নতুন বছরের গোড়াতেই স্থানীয়-পরিযায়ী এবং বিদেশি পাখির দল আস্তানা গেড়েছে ঝিলে| তার ফলে দুশ্চিন্তার কালো মেঘ সরে গিয়ে হাসি ফুটেছে পক্ষীপ্রেমিক ও এলাকার মানুষের মুখে |
গত বছর জানুয়ারিতে ঝিলে কচুরিপানায় ভর্তি থাকায় সেখানে বাসা বাঁধতে না পেরে ফিরে গিয়েছিল বহু পাখি। সে বার কলকাতার পাখি পর্যবেক্ষক সংস্থা ‘প্রকৃতি সংসদের’ সদস্যদের পাখিসুমারিতে ২,৮৮৯টি পাখির উপস্থিতি নথিভুক্ত হয়েছিল। এবছর পাখি সুমারি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু না হলেও রবিবার যেসব সংস্থা সাঁতরাগাছি ঝিলে পাখি দেখতে এসেছিলেন তাঁরাই গুনে বলেছেন মোট ১৬ প্রজাতির ৫৬৯৪টি পাখির দেখা মিলেছে | ঘূর্ণিঝড় বুলবুল ও নানা কারণে ২০০০০ হাজার পাখির মৃত্যুর পরেও এই সংখ্যাটা আগামিদিনে আরো বাড়বে বলে আশাবাদী তাঁরা| ডিসেম্বরের শুরুর দিক থেকে পরিযায়ী পাখি আসা দেখে গতবছরের তুলনায় এবছর আরও বেশি প্রত্যাশা করেছিলাম| তবে গত রবিবার দ্বিগুন সংখ্যক পাখি দেখা গিয়েছে তা প্রত্যাশার বাইরে বলে জানিয়েছেন অর্জন বসু রায় | যিনি এই ঝিলটি পরিষ্কার করে তোলার কাজে তদারক করেছিলেন| আগে ঝিল কচুরিপানায় ভরে যাওয়ায় যেখানে পাখিদের ঝিলে বসতে অসুবিধা হয়েছিল। সরকারি সংস্থা বায়োডাইভার্সিটি বোর্ড সাঁতরাগাছি ঝিল পরিষ্কার করার জন্য অর্থসাহায্য করে | ৮ অক্টোবর থেকে ২০ শে নভেম্বরের মধ্যে প্রায় ১,৫০০ ঘন্টা ব্যয় করে ঝিল থেকে কচুরিপানা সাফ করা হয় | তবে এর আগে ঝিলে পুরো কচুরিপানা সাফ করার ফলেও পাখি কমে গিয়েছিল। কোনও জলাশয়ে ৩০ শতাংশ কচুরিপানা থাকলে, তা পখিদের জন্য আদর্শ | সেই মত ৬০ শতাংশ কচুরিপানা সাফ করা হয়| ইতিমধ্যেই রাজ্য জীববৈচিত্র পর্ষদ ঝিলের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়েছে।আগামীদিনে পাখির সংখ্যা আরো বাড়বে বলে আশাবাদী সাধারণ মানুষ থেকে বনদপ্তর ও পরিবেশ সংগঠনগুলি |