কবি জয়দেবের স্মৃতিতে নির্মিত রাধাবিনোদ মন্দির

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সম্পদ হল 'গীতগোবিন্দ'। 'গীতগোবিন্দ'-এর রচয়িতা হলেন কবি জয়দেব গোস্বামী। লক্ষণ সেনের সভাকবি জয়দেব ছিলেন রাধাবিনোদের ভক্ত। তাঁর স্মৃতিতেই ১৬৮৩ সালে রাধাবিনোদ মন্দির নির্মাণ করা হয়। সেই সময় বর্ধমানের মহারাজা কৃষ্ণরাম রায়ের সভাকবি যুগলকিশোর মুখোপাধ্যায় মহারানী ব্রজকিশোরের কাছে এই মন্দির নির্মাণের জন্য অনুরোধ করেছিলেন। তার ইচ্ছাতেই জয়দেবের জন্মভিটে বীরভূমের কেন্দুলিতে এই মন্দির নির্মাণ করা হয়েছিল। এই মন্দির বিখ্যাত টেরাকোটার কাজের জন্য। মন্দিরের দেওয়ালে খোদাই করা রয়েছে রামায়ণ, মহাভারত ও ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নানা কাহিনী।

বহু ভক্তের ধারণা কবি জয়দেবের রূপ নিয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজেই অনেক শ্লোক রচনা করেছেন। জয়দেবের স্ত্রী অর্থাৎ পদ্মাবতীর জন্মের আগে তার মা-বাবা জগন্নাথ মন্দিরে মানত করেছিলেন। তাই জন্য কন্যার জন্মের পর তাকে দেবদাসী রূপে উৎসর্গ করেছিলেন তারা। কিন্তু তারপরেই একটি স্বপ্নাদেশ পেয়ে তারা কেন্দুলির জয়দেব গোস্বামীর সঙ্গে তার বিবাহ দেন। কথায় আছে, পদ্মবতী নিজেও ছিলেন লক্ষ্মীর অবতার। যখন জয়দেব গীতগোবিন্দের পদ গাইতেন তখন পদ্মবতী সেই গানের সুরে নাচতেন।

এছাড়াও বৈষব ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস জয়দেব নিজেও ছিলেন ঈশ্বরের অবতার। তাই তার স্মৃতিতে রাধাবিনোদ মন্দির নির্মাণ করা হয়েছিল। দীর্ঘকাল যত্ন না নেওয়ায় মন্দিরটির অনেক ক্ষতি হয়েছে। তবে সরকার মন্দিরটির সংস্কার করার কথা জানিয়েছে। প্রতিবছর মকর সংক্রান্তির সময় বাউল মেলার আয়োজন করা হয় এই মন্দির চত্বরে। যেখানে উপস্থিত থাকেন বহু ভক্ত। কলকাতা থেকে এই মন্দিরের দূরত্ব প্রায় ১৫৩ কিলোমিটার। বাসে ও ট্রেনে আসা যায় এই মন্দিরে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...