কসম খেয়ে বলতে পারি, ১৪ ফেব্রুয়ারি, এবারের মতো এতটা স্পেশ্যাল হয়ে আপনার জীবনে আর কখনই আসেনি। এবার সারাটাদিন আপনি থাকতে পারবেন ভ্যালেন্টাইনে রত, রাতে করবেন শিবরাত্রির ব্রত। সেন্ট ভ্যালেন্টাইন আর ভগবান ভোলানাথ দুজনই মহান প্রেমিক। একজন ইতিহাসে, অন্যজন পুরাণে। যুগে যুগে তাঁরা কত প্রেমিক-প্রেমিকার প্রেমেরতরীতে যে হাওয়া জুগিয়েছেন তার ইয়ত্তা নেই।
দু’হাজার বছর আগে রোমের পাগলা রাজা ধাঁই করে প্রেম-বিয়ে-যৌনতায় ‘না’ আইন জারি করে বসলেন। এবার যৌবনের হাওয়ায় ছেলেমেয়েরা যায় কোথায়? তখন তাদের একমাত্র সহায় হয়ে দাঁড়ালেন চার্চের পাদ্রী ভ্যালেন্টাইন। তিনি আকখুটে আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চার্চে লুকিয়ে ছেলেমেয়েদের মেলামেশার সুযোগ করে দিলেন। আকছার তাদের বিয়ে দিতে লাগলেন। কথাটা পাগলার কানে গেল। ভ্যালেন্টাইনের জেল হল, ফাঁসির হুকুম হল। জেলে থাকতে থাকতেই জেলরক্ষীর মেয়ের সঙ্গে তাঁরও প্রেম হয়ে গেল। পাদ্রীর প্রেম শাস্ত্রে মানা। বলা যায়, প্রেমের পথে শাসক আর শাস্ত্র দুইয়ের বিরুদ্ধেই ভ্যালেন্টাইন বিদ্রোহ করে ‘সেন্ট’ হয়েছিলেন।
আর ভোলানাথ? তাঁর মতো প্রেমিক তো জগতে দুটি নেই। প্রথম স্ত্রী সতীকে এতটাই ভালোবাসতেন যে, সতীর মৃত্যুর পর তাঁর দেহ কাঁধে তুলে শোকে পাগল হয়ে ব্রহ্মাণ্ড নষ্ট করে দেবার জন্য তাণ্ডব নাচ শুরু করেছিলেন। এমন প্রেমিক-পুরুষকে স্বামী হিসেবে পাওয়ার জন্য উমা অনেক তপস্যা করেন। তারপর শিবরাত্রির দিন ব্রত শেষে শিবকে স্বামীরূপে পেয়েছিলেন। তাই কুমারী মেয়েরা এখনও তাঁর মতো প্রেমিক ও স্বামী পাওয়ার জন্য শিবরাত্রির ব্রত করেন।
সুতরাং, প্রিয় প্রেমিকপ্রেমিকাগণ এদিন এঁদের দুজনকে তুষ্ট রাখাটাই সেফ। তাতে ভরসার ভিত পোক্ত হবে। তাই তাঁদের নামে লাল গোলাপ নিয়ে গুপ্ত-সুপ্ত-ক্ষিপ্ত-দৃপ্ত-লিপ্ত-সিক্ত-রিক্ত-ভীত-চকিত সমস্তরকমের প্রেমিক-প্রেমিকা বুক ঠুকে ‘মাভৈঃ মাভৈঃ’ বলে ঝাঁপিয়ে পড়ুন। বেজোড়কে জোড়ায় মেলানো আর ‘না’-কে ‘হ্যাঁ’ করানো, তাঁদের কাছে জলভাত, তারপরের খোয়াবটুকু অবশ্য তাঁদের স্ক্রিপ্টে নেই, সেটাতে ভাই কপোত-কপোতীর আপনা হাত...