গ্রাম বাংলায় আজও বয়স্ক থেকে যুবতী মেয়েরা “ভাতার” শব্দের ব্যবহার করে থাকে| ‘ভাতার’ অর্থ যে ভাত দেয় অর্থাৎ যে খেতে পড়তে দেয় সেই ভাতার; অর্থাৎ স্বামী|এমনকি অশ্লীল অর্থে উপপতিকেও বোঝানো হয়, যদি সে ওই মহিলাকে অর্থ বা অন্য কিছু দান করে|তবে সবটুকু নেহাৎই ভাত কেন্দ্রিক|ভাতই আসল খাওয়া|
ভাত বাঙালির ফার্স্ট হ্যান্ড লাভ|এক কথায় সাধারণ বাঙালির প্রথম প্রেম|সত্যি কথা বলতে একদিন ভাত না খেলে বাঙালি মনে করে বোধয় সেদিন খাওয়াই হয়নি|তবে শুধু বাঙালি কেন, দেশে, উপমহাদেশে ভাত অত্যন্ত জনপ্রিয় মেন কোর্স ফুড|উড়িষ্যা, অন্ধ্র, তামিলনাডু, কেরল ইত্যাদি কোস্টাল বেল্টে ভাত অতি জরুরি খাদ্য|গরিব থেকে বড়লোক, শিক্ষিত থেকে অশিক্ষিত, পুরুষ বা নারী, ভাত হলো লাঞ্চ, ডিনার|আবার কেউ কেউ ব্রেকফাস্টও ভাত দিয়েই সেরে ফেলেন|
‘ভাত’ কেন্দ্র করে তৈরী করা যেতে পারে ঘি ভাত, ভাতে ভাত (আলু সেদ্ধ), পান্তাভাত, ভাতভাজা (ফ্রাইড রাইস), দুধ ভাত(পায়েস), খিচুরী ইত্যাদি|
১৮৮৮ র ১০ই অক্টোবর সি বি ক্লার্কস (FRS এবং বোটানিস্ট)ইংল্যান্ডে তার বন্ধুকে একটি চিঠিতে বাঙালির ভাত প্রেম নিয়ে লিখেছেন |কত রকমের চালের চাষ হয় সে ব্যাপারেই আলোকপাত করেছেন| তিনি প্রায় ১০০ রকমের বিভিন্ন চালের উল্লেখ করেছেন|তার মধ্যে রয়েছে আউস আমন বোরো চাষের বিশদ বিবরণ|
চালের প্রধান উৎস হলো বর্ধমান জেলা|বছরের বেশিরভাগই তিন ফসলি জমির থেকে উৎপাদিত ধান| এটাই গোটা দেশে রপ্তানি করা হয়|গরম ভাত, ঠান্ডা ভাত, ভাতের ফ্যান সবই বাঙালির জীবনে এক রোজনামচা|