বাংলার ঝুলিতে এল দেশের ‘সেরা পর্যটন গ্রাম’- এর তকমা। মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জ ব্লকের লালবাগ মহকুমার ছোট্ট গ্রাম বড়নগর স্বীকৃতি পেল সেরা দর্শনীয় গ্রাম হিসেবে।
প্রতিবছর দেশের কেন্দ্রীয় পর্যটন ও সংস্কৃতি মন্ত্রক (Ministry of Tourism and Culture Government of India) আয়োজন করে Best Tourism Village Competition বা সেরা গ্রামীণ পর্যটন প্রতিযোগিতা –এর। যেখানে পরিবেশ, শিক্ষা, পর্যটক সহ বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে দেশের মধ্যে একটি গ্রামকে সেরা হিসেবে পুরস্কৃত করে কেন্দ্র। এইবছর সেই প্রতিযোগিতাতেই Agri-Tourism Village Category তে Best Tourism Village in India –এর শিরোপা পেল মুর্শিদাবাদের বড়নগর গ্রাম। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবসের দিন কেন্দ্রের তরফ থেকে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে বাংলার হাতে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালেও এই প্রতিযোগিতার সেরার তকমা পেয়েছিল বাংলা। আগের বছর মুর্শিদাবাদের কিরীটেশ্বরী গ্রাম পেয়েছিল ‘সেরা পর্যটন গ্রাম’-এর তকমা। এবার সেই শিরোপা পেল বড়নগর।
বড়নগর জুড়ে রয়েছে স্থাপত্যশিল্পের এক অনন্য নিদর্শন। পূর্বে এই গ্রামটি ‘ভারতের বারাণসী’ নামে পরিচিত ছিল। এখানে সবচেয়ে আকর্ষণীয় নিদর্শন হল রানি ভবানীর প্যালেস এবং চার বাংলা মন্দির। যা দেখার জন্য বহু মানুষ দূরদূরান্ত থেকে এসে এখানে ভিড় জমান। চার বাংলা মন্দিরের মধ্যে রয়েছে ভবানীশ্বর মন্দির, রাজরাজেশ্বরী মন্দির, গঙ্গেশ্বর শিবমন্দির, পঞ্চমুখী শিব মন্দির, আদ্যা মন্দির ও সিদ্ধেশ্বরী মন্দির। এছাড়াও এখানে রয়েছে শিব, কালী, বিষ্ণু প্রভৃতি বিভিন্ন হিন্দু দেবতার মন্দির। করেছিলেন। মন্দিরের গায়ে রয়েছে হিন্দু পুরাণের নানা ঘটনাবর্ণিত ছবি। জানা যায়, অষ্টাদশ শতকে নাটোরের রানী ভবানী এই মন্দিরগুলি নির্মাণ করেছিলেন।
প্রাচীন বাংলার সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য বহন করছে মুর্শিদাবাদের বড়নগর। এই গ্রামের বাসিন্দারা অনেকে তাঁত শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ও শাড়ি বোনার কাজে তারা খ্যাতি অর্জন করেছেন। বালুচরি, জামদানি, টাঙ্গাইলের মতো শাড়ি নির্মিত হয় এই গ্রামে। এছাড়াও, বাঁশ ও বেতের কারুশিল্প, মৃৎশিল্পের সঙ্গেও জড়িত রয়েছেন অনেকে। মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যেরাও সক্রিয় বড়নগর গ্রামে। তারা নানা শিল্পকর্ম করে তা পর্যটকদের কাছে বিক্রি করে আয় করেন। তাই এই খবরে খুশির হাওয়া বইছে গ্রাম জুড়ে।