দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির দেখা না মিললেও দেশের বেশ কিছু অঞ্চলে করাল থাবা বসিয়েছে বর্ষা। ভারী বর্ষার দরুণ সেইসব অঞ্চলগুলিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাধারণ জনজীবন। রাস্তার প্রান্তে উন্মুক্ত ম্যানহোলগুলি তার মধ্যে আবার নতুন করে বিপত্তি ডেকে এনেছে। সম্প্রতি মুম্বইয়ের গোরগাঁও অঞ্চলে একটি খোলা ম্যানহোলে পড়ে গিয়ে প্রবল জলচ্ছাসে তলিয়ে গিয়েছে বছর দুইয়ের এক শিশু। এহেন পরিস্থিতিতে এই ধরণের দুর্ঘটনা এড়াতে উদ্যোগ নিয়েছেন বেঙ্গালুরুর এক পুলিশকর্মী। শুধু তাই নয়, তাঁর কাজের প্রশংসায় রীতিমত ভাইরাল হয়ে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া।
রবিবার রাতে, এইচএসআর থার্ড সেক্টরে পুলিশ ভ্যান নিয়ে টহল দিচ্ছিলেন বেঙ্গালুরুর কন্সটেবল গিরিশ এম। টহল দেওয়ার সময় লক্ষ্য করেন এক মহিলা ও তাঁর ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে বিপজ্জনক ভাবে একটি খোলা ম্যানহোল পেরোচ্ছেন। ঘটনা দেখে আঁতকে ওঠেন গিরিশ বাবু। এই ঘটনায় চিন্তার ভাঁজ পড়ে তাঁর কপালে। এরপরই তৎপরতার সাথে নিজ উদ্যোগে ভাঙা পাথরের চাঁই দিয়ে ম্যানহোল ঢাকতে দেখা যায় তাঁকে। রাস্তায় যেখানে যেখানে এধরনের উন্মুক্ত ম্যানহোল রয়েছে, প্রত্যেকটি নিজ দায়িত্বে বন্ধ করেন তিনি। নাগরিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই তাঁর এই উদ্যোগ। ঘটনার ছবি ভাইরাল হতেই ‘সুপারহিরো’র শিরোপায় ভূষিত হন গিরিশ, সঙ্গে পান একরাশ প্রসংশা-বার্তা। অসংখ্য মানুষ তাকে টুইট করে শুভেচ্ছা জানান।
নিশ্চিত দুর্ঘটনার কবল থেকে নাগরিকদের পরিত্রাণ দেওয়ার লক্ষ্যে সিনিয়র বিভাগ থেকে তাঁকে সন্মানিত করা হয়। ডেপুটি পুলিশ কমিশনারও সন্মান জানান তাঁকে।
এই ধরণের ঘটনা আকছার ঘটে থাকে নগরের পথে ঘাটে। নতুন কিছু নয় এই ঘটনা। তবে কেন সচেতন নয় জনজাতি? এই ছোট ছোট ঘটনাগুলির মোকাবিলায় কেন তাঁরা নিজে থেকে এগিয়ে আসেন না? এই প্রশ্নগুলোই বারবার উত্থাপিত করছেন বেঙ্গালুরুর এই পুলিশকর্মী।
এ প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, “এই বিষয়গুলি নিয়ে প্রত্যেকের আরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন। সিভিক আধিকারিকদের অপেক্ষায় বসে না থেকে আমরা নিজেরাই প্রত্যেকে এই ধরণের উদ্যোগ নি্যে, সাধারণ মানুষদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে, অবধারিত বিপর্যয়ের হাত থেকে তাঁদের রক্ষা করতে পারি।“
পুলিশকর্মী হিসেবে বেতনের অংশটুকু ছাড়াও সমাজের প্রতি প্রাথমিক দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধকে তুলে ধরে সচেতনতার বার্তা দেয় তাঁর এই কাজ। আর শুধু তাই নয়, একজন প্রকৃত নাগরিকের দায়িত্ব সম্পর্কেও প্রশ্ন তোলে তাঁর মানবিক লোকাচার।
প্রসঙ্গত, বেশ কিছুদিন আগে আমেরিকার একটি অঞ্চলে, সম্প্রতি রাস্তার প্রান্তে এই ধরণের একটি গর্তের দেখা মেলে। বিষয়টিকে প্রশাসনের নজরে আনতে এক ব্যাক্তি গর্তটি’র তিন মাস পূর্তি উপলক্ষ্যে ফেসবুকে একটি একটি পার্টি দেন। গর্তের জন্মদিনের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করার সঙ্গে সঙ্গেই টনক নড়ে স্থানীয় পূর্ত বিভাগের। ফলস্বরূপ বিষয়টিকে চিহ্নিত করে গর্ত পূরণ করেন তাঁরা।