শীত পড়লেই বাঙালির মনে যে খাবারের কথা আসে, তা হল নলেন গুড়ের তৈরী যে কোনও পদ। তা সে মিষ্টির যে রকমারি পদ-ই হোক বা পিঠে-পায়েশ অথবা শুধুই গুড়ের স্বাদ নিয়ে মুখ মিষ্টি করা। এ- হেন নলেন গুড়ের অবস্থা কিন্তু বাংলায় খুব একটা ভালো নেই। প্রতি বছর-ই কিছু না কিছু সমস্যার কথা শোনা যায় এ নিয়ে। তবে আশার খবর হল এই বাংলার নিজস্ব নলেন গুড় বিদেশের মাটিতেও জায়গা করে নিয়েছে। বিশ্ব-বাংলার ব্র্যান্ডে টিউব নলেন গুড় ইতিমধ্যেই জনপ্রিয় হয়েছে। তাছাড়া মাজদিয়ার নলেন গুড়-ও যাচ্ছে বিদেশে। সকলেই জানে সারা রাজ্যেই এই মাজদিয়ার গুড়ের চাহিদা রয়েছে। কৃষ্ণগঞ্জের মাজদিয়ার নলেন গুড়ের খ্যাতি বহুদিন ধরেই। একদা চূর্ণী নদীতে নৌকোর মাধ্যমে জলপথে কলকাতার বাগবাজার, শেওড়াফুলি, মুর্শিদাবাদে নলেন গুড় যেত। ওই গুড়-ই কলকাতার নামি-দামি মিষ্টির দোকানে সরবরাহ হত। এখনও এখানকার গুড় কলকাতায় আসে, কিন্তু তা ট্রেনে করে এবং লরিতে। দুই বছর হল তা টিউব বন্দি হয়ে বিদেশে যাচ্ছে। বিশ্ব বাংলার ব্র্যান্ডে ছোট ছোট টিউব বন্দি হয়ে এই গুড় খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে। রাজ্য খাদি ও গ্রামোদ্যোগ দফতরের উদ্যোগে মাজদিয়ার ভাজনঘাটে একটি কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানেই টিউবে পুরে তা বিদেশে পাঠানো হচ্ছে। গুড় তৈরী করে এখানকার কয়েক হাজার মানুষ আর্থিক লাভবান হন। এই অঞ্চলের গুড়ের যা স্বাদ, তা অন্য কোনোও জায়গার গুড়ে পাওয়া যায় না। শীত পড়লেই প্রতিদিন শিয়ালদাগামী লোকাল ট্রেনের দুটি ভেন্ডার কামরা ভর্তি থাকছে নলেন গুড়ে। যা কলকাতা সহ বিভিন্ন জায়গায় চলে যাচ্ছে। প্রতি রবি ও বুধবার জমজমাট হয়ে ওঠে মাজদিয়ার গুড়ের হাট। এখানেও কেনা-বেচা হয় নলেন গুড়। এভাবেই নিজস্ব অঞ্চল সহ বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত এমনকি বিদেশকেও মাতিয়ে রাখছে মাজদিয়ার নলেন গুড়।