বাংলার মসলিনের জি আই স্বীকৃতি

বাংলার মসলিনের খ্যাতি জগৎবিখ্যাত। বাংলার মসলিনের খোঁজ কিন্তু বহু গল্পেও পাওয়া গেছে। সেই কাপড় নাকি একটি আংটির মধ্যে দিয়েও চলে যেত। ছোট্ট একটি দেশলাইয়ের বাক্সের মধ্যেও থেকে যেত সেই কাপড়। এর থেকেই বোঝা যায় কতটা সূক্ষ্ম ছিল এই কাপড়ের বুনন। নবদ্বীপের মাটিয়ারি কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠানের কারিগরেরা এই মসলিন কাপড়ের সূক্ষ্মতার বিষয়টি যথেষ্ট ভালোভাবে প্রমান করেছেন। ইতিমধ্যেই ৫৫ কাউন্টের মসলিন সুতোর কাপড় বাণিজ্যিকভাবে তাঁরা উৎপাদন করছেন।

এই মসলিন উৎপাদনের সবচেয়ে জনপ্রিয় কেন্দ্রটি হলো নবদ্বীপের মাটিয়ারি কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠান। এই কেন্দ্রে এই শিল্পের সাথে যুক্ত সমস্ত মানুষই কোনো না কোনো সময়ে রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পেয়েছেন। এই সাফল্যকে স্থায়ী করতে এবার উদ্যোগ নিয়েছেন রাজ্যের খাদি বোর্ড। এই সূত্রেই এবার বাংলার মসলিনের হতে চলেছে জি আই রেজিস্ট্রেশন। পশ্চিমবঙ্গ খাদি এবং গ্রামীণ শিল্প পর্ষদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই এর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পর্ষদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বাংলার নিজস্ব সম্পদ হলো এই মসলিন। তাই এই মসলিনের জি আই রেজিস্ট্রেশনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কথা অনুযায়ী, এই কাজ ইতিমধ্যেই অনেকদূর এগিয়ে গেছে। তাই বাংলার মসলিনের জি আই রেজিস্ট্রেশন পাওয়া এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।

বাংলার অহংকার এই মসলিনের খোঁজ পাওয়া যায় নানা গল্প এবং নাটকেও। বহু মানুষের মসলিনের সাথে পরিচয় কিন্তু এই গল্প বা নাটকের হাত ধরেই। বাংলা এই মসলিনের জন্য বিখ্যাত হলেও মাঝে এই সুতোর উৎপাদন অনেকটাই কমে গিয়েছিলো। সেখান থেকে আবার ঘুরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এই শিল্পের সাথে যুক্ত মানুষজন। আবারও ফুলে ফেঁপে ওঠে এই ব্যবসা। বিদেশেও রপ্তানি হতে শুরু হয়। স্বাধীনতার পর যখন মসলিন উৎপাদনের কাজ শুরু হয় তখন নবদ্বীপের এই মাটিয়ারি কেন্দ্রেই প্রথম ৫০০ কাউন্টের মসলিন তৈরী করতে সক্ষম হয়। এরপর তারা ৬০০ কাউন্টের উৎপাদন করতেও সক্ষম হয়। একজন মসলিন শিল্পীর কথায়, তারাই যে এই উৎপাদন করছেন সেই স্বত্বাধিকার পাওয়ার জন্য  জন্য জি আই রেজিস্ট্রেশনের খুবই প্রয়োজনীয়তা ছিল। খাদি বোর্ড এই ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়াতে বেশ খুশি শিল্পীমহল।

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...