এ বছর পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দ্বারা ‘শিক্ষারত্ন সম্মান’ পুরস্কার পাচ্ছেন পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশনের গণিত বিভাগের শিক্ষক দেবাশিষ মণ্ডল। চলতি মাসের ৫ সেপ্টেম্বর, অর্থাৎ শিক্ষক দিবসের দিনেই তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হবে এই পুরষ্কারটি।
পুরুলিয়ার রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠের প্রক্টর ও গণিত বিভাগের প্রধান শিক্ষক দেবাশিষ মণ্ডল। তিনি এই ৩৪ বছরের শিক্ষকতা জীবনে রামকৃষ্ণ মিশনে অনেক গুরুদায়িত্ব পালন করেছেন। শিক্ষাজীবনে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ‘ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন আইকন অ্যাওয়ার্ড’ এবং ‘ভারতজ্যোতি শিক্ষারত্ন পুরস্কার’ পেয়েছেন।
তাঁর জন্ম হয় ১৯৬৮ সালের ১০ জানুয়ারিতে। বাঁকুড়া জেলার সিমলিপাল থানার কাছেই পারশোলা গ্রামে থাকেন তিনি। তাঁর বাবা পেশায় একজন শিক্ষক ও তাঁর মা গৃহবধূ। বাঁকুড়া জেলা স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন তিনি এবং তারপর সেখানকার খ্রিস্টান কলেজ থেকে স্নাতক হন। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি স্নাতকোত্তর হন। এরপরেই দেবাশিষের শিক্ষকতা কর্মজীবন শুরু হয়।
শিক্ষকতার পাশাপাশি দেবাশিষ মণ্ডল কিছু বই প্রকাশও করেছেন। তাঁর প্রকাশিত বইগুলি হল ‘খেয়ালি খাম’, ‘শূন্য থেকে শুরু’, ‘বিজ্ঞানীদের ইস্কুলবেলা’, ‘এক ঈশ্বর প্রশ্ন অনেক’, ‘ভীতুদের জন্য নয়’, ‘চার চার চুয়াল্লিশ’। তাঁর কিছু সম্পাদিত বই রয়েছে, সেগুলি হল ‘তারুণ্যের প্রতিধ্বনি’, ‘রাত্রিশেষের নতুন সূর্যালোক’, ‘করোনাকালের কবিতা’, শত ছড়ায় সত্যজিৎ’। এই সাহিত্য কর্মের জন্যে তিনি ‘বিভূতিভূষণ স্মৃতি পুরস্কার’ এবং ‘সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় স্মৃতি পুরস্কার’ লাভ করেছেন তাঁর জীবনে।
বাংলাদেশের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়তে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে গবেষকমুলক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন তিনি। শিক্ষকতা ও সাহিত্য ছাড়াও তাঁর কিছু শখ আছে, সেগুলি হল ক্রিকেট, ফুটবল, নাটক এবং ক্যুইজ ও রয়েছে।
কঠোর নিয়ম ও নিষ্ঠার মধ্যে নিজেকে আবদ্ধ রেখে লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছেন বাঁকুড়ার এই দেবাশিষ মণ্ডল। মিশনের ছাত্রদের কাছে তিনি খুবই প্রিয় এক শিক্ষক। তাঁর এই সম্মানে গর্বিত গোটা রামকৃষ্ণ মিশন সহ তাঁর পরিবার এবং পারশোলা গ্রাম। আনন্দ ও উৎসাহের মধ্যেই এখন রয়েছে গোটা পুরুলিয়ার রামকৃষ্ণ মিশন।