আষাঢ়ের রান্নাঘরে ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেলের কচুবাটা’ আর কচুপাতা ভাপা চিংড়ি

গরম ভাত দিয়ে ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেলে’র মানকচু বাটা খেয়েছেন? একবার খেলে ভুলতে পারবেন না, এমন অপূর্ব তার স্বাদ! পূব-বাংলার খুলনার কলাপোতা গ্রামের মেয়ে ইন্দু, দেশভাগের পর কলকাতায় এসে রান্নায় মন জিতে নেয়। ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেলে’র মানকচু বাটা এখন রান্নাঘরে আগ্রহ। বাজারেও খোঁজ চলে বিক্রেতার কাছে। আসলে ‘কচু’কে যতই ‘অকাজ’র মান দেওয়া হোক কচু চিরকালই বাঙালির প্রিয়। এপার বাংলা- ওপার বাংলা দুই বাংলার হেঁশেলের ঐতিহ্য। বর্ষায় তার স্বাদ আরও বেড়ে যায়। আজ আষাঢ়ের রান্নাঘরে হোক ‘কচু স্পেশ্যাল’

 

ইন্দুবালার কচুবাটা

 

kochu

 

কী কী লাগবে

 

মানকচু-৩০০ গ্রাম

নারকেল কোরা- আধা কাপ

সরষের বাটা- ১ চা-চামচ

পোস্ত- ১ চা-চামচ

কাঁচা লঙ্কা- ৬-৭টি

সরষের তেল ২ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো

 

kochu bata

 

কীভাবে রাঁধবেন

মানকচু চৌকো করে করে নিন। নুন মেখে ১০ মিনিট রেখে পানি চেপে বের করে নিন। শিলপাটায় প্রথমে শুধু কচু বেটে আলাদা করে রাখুন। এবার নারকেল, সরষে, পোস্ত, কাঁচা লঙ্কা একসঙ্গে বেটে নিন। তাতে মেশান নুন। এবার বেটে রাখা সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে আরও একবার ভালভাবে বেটে সরষের তেল দিয়ে মেখে বাটিতে তুলুন। গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন এই কচুবাটা।

 

কচুপাতা ভাপা চিংড়ি

 

kochu cingri

 

কী কী লাগবে

 

কচুপাতা- ১০টি

মাঝারি চিংড়ি- ৫০০ গ্রাম

সর্ষের তেল- প্রয়োজন মতো

সর্ষে বাটা- ৩ টেবিল চামচ

পোস্ত বাটা - ৪ টেবিল চামচ

নারকেল কোরা- এক কাপ

কাঁচালঙ্কা- ৫টি

নুন ও চিনি- স্বাদমতো

হলুদ গুঁড়ো- দু’চা চামচ

পাতিলেবু- ১টি

 

কীভাবে রাঁধবেন

কচুপাতা জলে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন।  নুন, হলুদ মাখিয়ে রাখুন চিংড়িগুলো।  কচুপাতার নীচের অংশের মোটা শিরাটা বাদ দিয়ে পাতাগুলো কুচিয়ে নিন। জল গরম করে ৪-৫ মিনিট কচুপাতাগুলো ভাপিয়ে নিন।শিলপাটায় সরষে, নারকেল কোরা, কাঁচালঙ্কা একসঙ্গে বেটে নিন। ভাপিয়ে রাখা কচুপাতাও বেটে নিন।

কড়াইতে সরষের তেল গরম করে চিংড়িগুলো অল্প ভেজে তুলে নিন। ওই একই কড়াইতে আরও কিছুটা তেল যোগ করে কচুপাতা বাটা দিয়ে ভাল করে কষান। কষা হলে সরষে-কাঁচালঙ্কা-নারকেলের মিশ্রণটি দিয়ে আরও কিছুক্ষণ কষিয়ে নিন।

একে একে ভেজে রাখা চিংড়ি, হলুদ, নুন মিশিয়ে ভালোভাবে নাড়াচাড়া করুন। এরপর দুধ যোগ করে ৪-৫ মিনিট ঢেকে রান্না করুন। ঘন হয়ে এলে কাঁচা সরষের তেল ছড়িয়ে নিলেই তৈরি কচুপাতা চিংড়ি। এই রান্নায় সরষের তেলের ব্যবহার একটু বেশি।

 

কচুর লতি দিয়ে চিংড়ি

 

kochu loti

 

কী কী লাগবে

 

কচুর লতি – ১ আঁটি

চিংড়ি – ১/২ কাপ

পেঁয়াজ কুচি– ১ টেবিল চামচ

কাঁচালঙ্কা- ৬ টা

পেঁয়াজ ও জিরে বাটা – ২ চা চামচ

রসুন বাটা– ২ চা চামচ

আদা বাটা– ৩ চা চামচ

হলুদ গুড়ো– ১ চা চামচ

মরিচ গুড়ো– ১ চা চামচ

ধনে গুড়ো– ১/২ চা চামচ

জিরা– ১/৪ চা চামচ

নুন– স্বাদ মত

তেল– ৩ টেবিল চামচ

 

কীভাবে রাঁধবেন

চিংড়ি পরিষ্কার করে ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে নিন। সামান্য নুন মাখিয়ে কিছু সময় রেখে দিন।

লতি ছুলে নিন। ভাল করে ধুয়ে জল ঝরাতে দিন।

কড়াইতে তেল দিন। তেল গরম হলে এতে নুন মাখানো চিংড়ি দিন। ১ মিনিট নেড়ে নিয়ে উপর থেকে এক চিমটে হলুদ গুঁড়ো ছিটিয়ে দিন। নেড়েচেড়ে নামিয়ে নিন।

চিংড়ি খুব অল্প সময় ভাজবেন।  বেশি সময় ভাজলে শক্ত হয়ে যাবে।অল্প আঁচে দ্রুত শক্ত হয়ে যায়।

ওই তেলে গোটা জিরে, কাঁচা লঙ্কা পেয়াজ কুচি দিন এবং নাড়তে থাকুন। পেঁয়াজ হালকা ভাজা হতে দিন। পেয়াজের রঙ সোনালী হলে এতে সামান্য হলুদ দিন। এবার একে একে আদা বাটা,রসুন বাটা,পেঁয়াজ বাটা দিয়ে মেশাতে থাকুন। প্রথমে হলুদ দিয়ে নিলে তেল ছিটবে না। না হলে তেলে বাটা মশলা দিলে চারিদিকে ছিটতে থাকবে। নেড়ে নিয়ে এতে নুন, লঙ্কা গুড়ো, ধনে গুড়ো ও বাকি হলুদ গুড়ো দিন।

সামান্য জল দিয়ে দিন। এর মধ্যে কাঁচা লঙ্কা ফালিগুলো দিয়ে নেড়ে দিন। জল শুকিয়ে এলে ধুয়ে রাখা কচুর লতি দিয়ে নাড়ুন।

 এভাবে অল্প অল্প করে জল দিয়ে কিছু সময় কষিয়ে নিন।  লতি প্রায় নরম হয়ে এলে হলে এর মধ্যে ১ কাপ জল  দিন। ফুততে থাকলে ভেজে রাখা চিংড়িগুলো দিয়ে নেড়ে দিন। জল শুকিয়ে মাখা মাখা হলে নামিয়ে নিন। গরম গরম ভাতে সঙ্গে পরিবেশন করুন ‘লতি চিংড়ি’।

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...