‘যা কেউ পারেনি এক বাঙালি পেরেছে!’ মানব হৃদপিণ্ডের অজানা তথ্যের সমাধান তরুণ বিজ্ঞানীর হাতে

কথায় আছে ইচ্ছে থাকলে বাঙালিরা সব কিছু করতে পারে। সেটাই প্রমান হল এবার!!

বিজ্ঞানী মহলের কাছে হৃদপিন্ডের অনবিক-গঠনের সেই রহস্য আজও ধরা দিতে পারেনি। কত কিছুই করা হয়েছে, তবে সমস্যার সমাধান করা যায়নি। কিন্তু যেটা কেউ পারলো না, সেটাই করে দেখালো এক বাঙালি!

আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অফ ম্যাসাচুসেট্স মেডিকেল স্কুল থেকে এক তরুন বাঙালি বিজ্ঞানী তথা জঙ্গলমহলের 'ভূমিপুত্র' এবং আইআইটি খরগপুরের প্রাক্তনী ড: দেবব্রত দত্ত ও তাঁর সহকারী গবেষকেরা ৬০ বছরের এই গবেষণার সমাধান করলেন।

কী এই বিষয়?

আমরা বেঁচে আছি হৃদপিন্ডের জন্যে। সেখানে প্রত্যেকটা মুহূর্তে সারা শরীরে রক্ত পাম্প হয়ে। সেই জন্যই আমরা হৃদস্পন্দনের 'লাব ডাব ' আওয়াজ অনুভব করতে পারি। তাই হৃদবিজ্ঞানিরা হৃদযন্ত্রের এই লাব ডাব আওয়াজের আণবিক পদ্ধতি খুঁজে বের করার চেষ্টায় ছিলেন।

হৃদবিজ্ঞানীদের মত থেকে জানা গিয়েছে যে অ্যাকটিন ফিলামেন্ট ও মায়োসিন ফিলামেন্ট, এই দুই প্রোটিন একে অপরের ওপর ফিয়ে হেঁটে বেড়ায়, এবং সেই আওয়াজের নামই হল 'লাব ডাব'। বিজ্ঞানীদের কাছে অ্যাক্টিন ফিলামেন্টের আণবিক গঠন জানা থাকলেও মায়োসিন ফিলামেন্টের জানা নেই।

সেটাই সমাধান হল এবার।

তাঁদের এই আবিষ্কারটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান পত্রিকা 'নেচার' এবং 'নেচার'-এর আন্তর্জাতিক নিউস ডিপার্টমেন্ট 'নেচার নিউস এন্ড ভিউস' -এ প্রকাশিত হয়েছে।

'ভূমিপুত্র' ড: দেবব্রত দত্ত এক সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন যে তাঁরা অত্যাধুনিক প্রযুক্তি cryo-ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপি এবং আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্সর সহায়তায় মানুষের হৃদপিন্ড থেকে বের করা এই মায়োসিন ফিলামেন্টের গঠন আবিষ্কার করেছেন। এটি মায়োসিন, টাইতিন এবং মায়োসিন বাইন্ডিং প্রোটিন সি-এর একটি কমপ্লেক্স আর্টিটেকচার।

বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের ছেলে দেবব্রত। বাঁকুড়া ক্রিস্টান কলিজিয়েট স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে রসায়ন সন্মানিক স্নাতক হয়েছেন। এরপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাস করেন তিনি।

ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছিলেন তিনি। ইচ্ছে ছিল বড় বিজ্ঞানী হবেন। তাই আইআইটি খড়্গপুর থেকে বায়োটেকনোলজির ওপর গবেষণা শুরু করেন তিনি। এরপর ২০১৯ সালে সেখান থেকেই পিএইচডি করে আমেরিকা দেশে পাড়ি দেন।

সেখানে প্রথমে তিনজন আমেরিকার 'ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ'- এ গবেষণা করেন, এরপর 'ইউনিভার্সিটি অফ ম্যাসাচুসেট্স মেডিকেল স্কুলে' রেডিওলজি বিভাগে ড: রজার ক্রেইগের ল্যাবরেটরিতে জোগ দেন। এখন থেকেই শুরু হয়ে যায় সেই 'রহস্য'-এর অভিযান এবং সফল হন তিনি।

তিনি সত্যি প্রমান করে দিয়েছেন যে বাঙালি চাইলে সব কিছু করতে পারে। দেবব্রত দত্তের এই আবিষ্কার গোটা বিজ্ঞান মহলে সাড়া ফেলে দিয়েছে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...