থোড়, পুদিনাপাতা আর শশার কিছু সেকালের রান্না

গ্রীষ্মের ছোঁয়া লাগা বসন্তে শরীর ঠান্ডা রাখতে চাইলে দেখতেই হবে থোড়, পুদিনাপাতা আর শশার অচেনা রান্নার রেসিপি।

থোড় চিংড়ি

কলা গাছের  কান্ডের ভেতরের অংশই  হল থোড়। থোড়ের গুণের শেষ নেই। এতে আছে ফাইবার, আছে পটাশিয়াম, ভিটামিন বি৬ ইত্যাদি নানান প্রয়োজনীয় উপাদান। কোষ্ঠকাঠিন্য, রক্তাল্পতা ইত্যাদি সমস্যায় থোড়ের বিকল্প নেই। নিরামিষ থোড় রান্নার পাশাপাশি আমিষ থোড় রান্নার কদরও কম নয়। তেমনই  এক রান্না থোড়
চিংড়ি।

কী কী লাগবে

থোড়-১ টি( কচি)

ছোট চিংড়ি-২৫০ গ্রাম

কালোজিরে-ফোড়নের জন্য

শুকনো লঙ্কা-ফোড়নের জন্য

তেজপাতা- ফোড়নের জন্য

হলুদ গুঁড়ো-২ চা চামচ

জিরে গুঁড়ো- ২ চা চামচ

লঙ্কা গুঁড়ো- স্বাদ
অনুযায়ী

নারকেল-আধমালা

কাঁচালঙ্কা-২/৩টে

সর্ষের তেল-রাঁধবার জন্য

নুন-স্বাদ অনুযায়ী

চিনি-সামান্য

ঘি-১ চা চামচ

কীভাবে রাঁধতে হবে

থোড় সরু সরু করে কেটে জলে ভিজিয়ে নিয়ে তুলে চিপে জল ঝরিয়ে নুন মাখিয়ে রাখতে হবে নারকেল কুড়িয়ে নিতে হবে। চিংড়ি মাছ ভালো করে ধুয়ে সুতো ফেলে নুন-হলুদ মাখিয়ে রাখতে হবে। থোড় আবার চিপে জল ফেলে দিতে হবে। কড়াই গ্যাসে বসিয়ে তেল দিয়ে গরম করে চিংড়ি মাছগুলো হালকা করে ভেজে নিতে হবে।প্রয়োজন হলে আর একটু তেল দিয়ে গরম করে শুকনো লঙ্কা, তেজপাতা ও কালোজিরে ফোড়ন দিয়ে কুচিয়ে রাখা নুন মাখানো থোড় দিয়ে একটু নাড়াচাড়া করে হলুদ গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো ও জিরে গুঁড়ো দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে  ভেজে রাখা চিংড়ি, কাঁচালঙ্কা, নুন ও নারকেল কোরা দিয়ে নেড়ে সামান্য জল দিয়ে গ্যাসের আঁচ কমিয়ে ঢাকা দিয়ে থোড় সেদ্ধ করতে হবে। থোড় নরম হলে চিনি দিয়ে জল শুকিয়ে নামিয়ে নিতে হবে।

শশা চচ্চড়ি

শশা নানা গুণে গুণী। গরমের দেশে তার প্রচুর চাহিদা।ওজন কমাতেও শশার জুড়ি মেলা ভার। শশা মূলত স্যালাড, রায়তা বা শুধু খাওয়া হয়। শশার  রান্না এখন নিতান্তই বিরল। আজ তেমনই এক অচেনা রান্নার সন্ধান দেওয়া হল।রান্নার জন্য একটু লালচে ধরনের খুব কচি নয় এমন শশাই ভালো।

কী কী লাগবে

শশা-১ কেজি

বিউলির ডালের বড়ি-৫০গ্রাম

হলুদ গুঁড়ো-২ চা চামচ

শুকনো লঙ্কা-ফোড়নের জন্য

মেথি-ফোড়নের জন্য

তেজপাতা-ফোড়নের জন্য

কাঁচালঙ্কা-৪/৫ টা

সর্ষে-২ চামচ

সর্ষের তেল-রাঁধবার জন্য

চিনি- স্বাদ অনুযায়ী

নুন-স্বাদ অনুযায়ী

কীভাবে রাঁধতে হবে

শশা ভালোভাবে ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে লম্বা লম্বা করে কেটে নিতে হবে। বীজের অংশ ফেলে দিতে হবে। গ্যাসে কড়াই বসিয়ে তেল গরম করে বড়ি ভেজে তুলে রাখতে হবে। দরকার মনে করলে আর একটু তেল দিয়ে গরম করে শুকনো লঙ্কা, মেথি ও তেজপাতা ফোড়ন দিয়ে শশা ছেড়ে দিতে হবে। একটু নেড়ে চেড়ে হলুদগুঁড়ো আর নুন দিয়ে ঢাকা দিয়ে আঁচ একটু কমিয়ে সেদ্ধ করতে হবে। সেদ্ধ হলে চিনি, কাঁচালঙ্কা, সর্ষেবাটা দিয়ে নাড়াচাড়া করে বিউলির ডালের ভেজে রাখা বড়িগুলো দিয়ে মিশিয়ে বেশ চচ্চড়ির মতো হলে নামিয়ে নিতে হবে।চচ্চড়ি কিন্তু গরম ভাতের সঙ্গেই বেশি জমে।

ধনে-পুদিনাপাতা বাটায় মাছ

ধনেপাতা,পুদিনাপাতা এখন বছরভোর পাওয়া গেলেও গরম বেশি পড়লে গন্ধ তেমন থাকে না এই ফাগুনদিনের নরম গরমে তাই ধনে-পুদিনা দিয়ে মাছের ঝোল রাঁধা যেতে  পারে।

কী কী লাগবে

রুই মাছ-১ কেজি

আলু-৩০০ গ্রাম

হলুদগুঁড়ো-৩ চা চামচ

লঙ্কা গুঁড়ো-স্বাদ
অনুযায়ী

জিরে গুঁড়ো-১ চামচ

ধনে গুঁড়ো-২ চা চামচ

আদা-১৫ গ্রাম

ধনেপাতা-২ আঁটি

পুদিনাপাতা-১ আঁটি

কালোজিরে- ফোড়নের জন্য

কাঁচালঙ্কা-৫-৬ টা

সর্ষের তেল- রাঁধবার জন্য

নুন- স্বাদ অনুযায়ী

কীভাবে রাঁধতে হবে

রুই মাছ ভালোভাবে ধুয়ে মাথার অংশ বাদ দিয়ে বাকি অংশ টুকরো করে নিতে হবে। মাছের টুকরোগুলো বারবার করে ধুয়ে নিতে হবে। এবার ওই টুকরোগুলোয় নুন-হলুদ মাখিয়ে রাখতে হবে। আলু খোসা ছাড়িয়ে লম্বা লম্বা করে কেটে ধুয়ে নিতে হবে। ধনেপাতা-পুদিনাপাতা ধুয়ে বেছে বেটে নিতে হবে। কড়াই গ্যাসে বসিয়ে তেল দিয়ে
গরম করে আলু আর মাছ হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তেল কম মনে হলে আর একটু তেল দিয়ে গরম হলে কালোজিরে ফোড়ন দিতে হবে। তারপর হলুদ গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো, জিরে গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো ও আদাবাটা অল্প  জলে গুলে তেলে দিতে হবে। একটু নাড়াচাড়া করে ভেজে রাখা আলু দিয়ে কষিয়ে জল দিতে হবে।আলু একটু সেদ্ধ হলে ভাজা মাছের টুকরোগুলো, নুন আর কাঁচালঙ্কা দিয়ে ফোটাতে হবে। আলু সেদ্ধ হলে ধনে- পুদিনাপাতা বাটা দিয়ে সামান্য ফোটালেই তৈরি হয়ে যাবে ফাগুন দিনের দারুণ স্বাদের মাছের ঝোল। পরিবেশনের সময় গরম ভাত ছাড়া অন্য কিছুর সঙ্গত থাকলে কিন্তু চলবে না।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...