তিরুপতির চুল, লন্ডনের টোনার আর ৪ ঘন্টার মেকআপে রুক্মিণী ‘বিনোদিনী’র মেজাজে

পাতা কাটা চুল। চিলতে কপাল। পরনে লাল পাড়ের নীল বেনারসি আর ওয়াইন ভেলভেটের ব্লাউজ। দৃপ্ত ভঙ্গীতে তাকিয়ে আছেন বিনোদিনী। ঠোঁটে হালকা হাসির রেখা বলে দিচ্ছে যুদ্ধ সহজ নয়। হার মানতে তিনি আসেননি। গা ভরা গয়নার থেকেও বেশি উজ্জ্বল তাঁর চোখের নীরব ভাষা। এই মুহূর্তে বাংলা ছবির দর্শকদের চোখ টেনে নিয়েছে এমনই এক পোস্টার। বিনোদিনীর ভূমিকায় রুক্মিণী মৈত্র।

রামকমল মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় আসছে বিনোদিনী দাসীর বায়োপিক ‘বিনোদিনী: একটি নটীর উপাখ্যান’। নটী বিনোদিনীর লুক তুলে ধরা সহজ নয়। পরিচালকের ভাষায় এ বেশ দুরূহ কাজ। মুখ্য অভিনেত্রী রুক্মিণীকে ‘নটী বিনোদিনী’ হিসেবে সাজিয়ে তুলতে পরিচালক রামকমল কৃতিত্ব দিয়েছেন তাঁর টিমের শুচিস্মিতা দাশগুপ্ত, বীথিকা বেনিয়া এবং মৌসমী ছেত্রিকে। অসম্ভব পরিশ্রম করেছেন ত্রয়ী। বিনোদিনীর আসল ছবি সেভাবে সংরক্ষিত নেই। তাই আরও কঠিন হয়ে পড়েছিল তাঁদের কাজটা। কেমন ছবি শাড়ির ডিজাইন, গয়না তাঁর খোঁজ বের করতে রীতিমতো রিসার্চ করতে হয়েছে। তিন সপ্তাহ ধরে চলেছে কস্টিউম ডিজাইনের কাজ। ছবির কস্টিউম ডিজাইন করেছেন ডিজাইনার শুচিস্মিতা দাশগুপ্ত।   

কঠিন চ্যালেঞ্জে পড়তে হয়েছিল বিনোদিনীর চুল নিয়েও। ছবির প্রয়োজনে রুক্মিণীকে চুল বাড়াতে হয়েছিল। তাঁর চুলের সঙ্গে টেক্সচার মিলিয়ে চার ফুট লম্বা চুল আনা হয়েছি তিরুপতির মন্দির থেকে। কপালের সামনের চুল পারফেক্ট করে তুলতেও কম বেগ পেতে হয়নি, প্রথমে জেল তারপর নারকেল তেল শেষপর্যন্ত জল দিয়ে তবেই পাওয়া গিয়েছে অমন পাতা কাটা চুল।

বিনোদিনীর জন্য লন্ডন থেকে আনা হয় বিশেষ ফেস টোনার। রুক্মিণীকে পরানো হয়েছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী মসলিন বেনারসী। সঙ্গে ওয়াইন রঙের ভেলভেট পাইপড ব্লাউজ। আর সাবেকি গয়না। পিরিয়ড ড্রামার প্রয়োজনমাফিক ভিন্টেজ লুক হলেও পরিচালক চেয়েছিলেন বিনোদিনীকে যেন পর্দায় উজ্জ্বল লাগে। তাই শিমার আর শাইন ব্যবহার করা হয়েছে।

বিনোদিনীর ফার্স্ট লুকের পোস্টার খুঁটিয়ে দেখবেনই দর্শকরা। বিনোদিনীর সাজগোজ, শাড়ি গয়নার সঙ্গে অবধারিতভাবে চোখ যাবে বিনোদিনীর হাতের আঙুলে। রুক্মিণীর হাতের আঙুল বলে দেবে এই ছবিতে বিনোদিনী হয়ে উঠতে কতখানি খুঁতখুঁতে ছিলেন তিনি।

নটী বিনোদিনীর জীবনের সঙ্গে এক হয়ে গিয়েছিল তাঁর থিয়েটারপ্রেম। থিয়েটার তাঁর ঈশ্বর আর অস্তিত্ব দুইই। মাত্র ২৪ বছর বয়সে বিদায় জানিয়েছিলেন মঞ্চকে। বারো বছরের সফল অভিনেত্রী জীবনে দর্শকদের সামনে বাংলার রঙ্গমঞ্চে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন প্রতিবার। এ ছবির পোস্টারের ব্যাকড্রপ সেই কথাই বলে। 

রামকমলের এই ছবিতে গিরিশ ঘোষের চরিত্রে দেখা যাবে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। অভিনেতা রাহুল বসু রাঙাবাবু। দাশু নিয়োগীর ভূমিকায় গৌতম হালদার। মীর গুর্মুখ রায়। চান্দ্রেয়ী ঘোষ গঙ্গা বাঈ আর ওম সাহানি কুমার বাহাদুর। ছবির সিনেম্যাটোগ্রাফির দায়িত্বে সৌমিক হালদার। সংগীত পরিচালনার দায়িত্বে সৌরেন্দ্র-সৌম্যজিৎ। ছবি প্রযোজনায় দেব এন্টারটেনমেন্ট ভেঞ্চার্স, প্রমোদ ফিল্মস ও অ্যাসোর্টেড মোশন পিকচার্স।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...