ভাত,ডাল আর গন্ধরাজ লেবুর রস গরমকালে বাঙালিদের সেরা খাবার বলেই ধরে নেওয়া হয়। সাদা ভাতের সাথে নানারকম ডাল বাঙালির মন ভালো করার জন্য যথেষ্ট। সোনামুগ ডাল থেকে শুরু করে মুসুর ডাল, মটর ডাল, অড়হর ডাল। ডালের প্রকারভেদ রয়েছে প্রচুর। আর শুধু প্রকারভেদই নয় ডালের কিন্তু রয়েছে যথেষ্ট গুণও। চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক কি কি গুণ রয়েছে বিভিন্ন ডালে এবং তা কিভাবে আমাদের শরীরের উপকার করে চলুন সেটাও জানা যাক........
১) কাতলা মাছের মাথা দিয়ে মুগডালকে বেশিরভাগ বাঙালি নেমন্তন্ন বাড়ির মূল পদ বলাই যায়। সেই মুগডালের কি কি গুণ রয়েছে জানেন কি? কাঁচা মুগডালে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন, ভিটামিন বি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, কপার, জিঙ্ক, ফাইবার প্রভৃতি নিউট্রিয়েন্টস বর্তমান। তাই জন্য এই ডাল যতটা সুস্বাদু তার থেকেও বেশি পুষ্টিকর। তবে যাদের গ্যাস বা অম্বলের সমস্যা রয়েছে, তাদের এই ডাল একটু বুঝে খাওয়া উচিত কারণ এই ডাল থেকে গ্যাস বা অম্বলের সমস্যা হতে পারে।
২) মুসুর ডাল নিরামিষ হলেও মুসুর ডাল কে আমিষ পদ বলা হয়। কিন্তু এতরকম ডাল থাকতে মুসুর ডালকেই কেন আমিষ বলা হয় জানা আছে কি? আসলে মুসুর ডালে প্রোটিনের পরিমান সবচেয়ে বেশি থাকে। যা সাধারণ নিরামিষ খাবারে থাকে না। মাছ বা মাংস খাওয়ার ফলে শরীরে যতটা প্রোটিন পৌঁছয়, মুসুর ডাল থেকে ঠিক সেই পরিমান প্রোটিন শরীর পায়। এছাড়াও মুসুর ডালে প্রচুর পরিমানে পটাশিয়াম, ফাইবার, এসেন্সিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে। এই ডাল রক্তে শর্করা এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
৩) দইবড়া বানানোর জন্য বিউলির ডালের সাথে মিশ্রিত করে ব্যবহৃত হয় অড়হড় ডাল। এই ডাল হালকা পিচ্ছিল ধরণের হয়ে থাকে। এই ডালে যথাক্রমে আয়রন থেকে শুরু করে ম্যাগনেসিয়াম, ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন বি এবং পটাশিয়াম প্রচুর পরিমানে থাকে।
৪) রবিবার জলখাবারে যে পদটি আবারও বাঙালির মন জয় করে বসে আছে তা হলো লুচি আর ছোলার ডাল। ছোলার ডাল খেতে যেমন সুস্বাদু সেরকমই উপকারী। ছোলার ডাল থেকেই যথাক্রমে ব্যাসন এবং ছাতু তৈরী হয়। ছোলার ডালে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমানে আয়রন, জিঙ্ক, ম্যাঙ্গানিজ, মলিবডেনাম, ফোলেট প্রভৃতি।
৫) বিউলির ডাল, পেটের সমস্যা থেকে শুরু করে হজমের সমস্যা প্রভৃতি ক্ষেত্রে মহৌষধি হিসেবে কাজ করে যে ডাল তা হলো এই বিউলির ডাল। নানা ধরণের বড়া থেকে শুরু করে ধোসা বা অন্যান্য সাউথের খাবার মূলত বিউলির ডাল দিয়েই তৈরী হয়। মুসুর ডালের মতোই এই ডালেও রয়েছে প্রচুর পরিমান প্রোটিন।
৬) রাজমা, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে থাকে। রাজমাতে উপস্থিত প্রচুর পরিমান প্রোটিন ও ফাইবার রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমান কমাতে সাহায্য করে।
৭) ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য যে ডালটি সবচেয়ে উপকারী তা হলো তড়কার ডাল। এই ডালে প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম থাকলেও এই ডালে সোডিয়ামের পরিমান খুব কম থাকে। তাই এই ডাল ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য খুব ভালো হয়।
গরমে আমের ডাল হোক বা মাছের মাথা দিয়ে মুগডালই হোক, উপকারিতা বুঝে ডাল বেছে নিন আর ডাল খেয়েই শরীর সুস্থ রাখুন।