ঝাল না খেলে নাকি বড় হওয়া যায় না। কি কথাটা চেনা চেনা মনে হচ্ছে তো? এই কথাটা মোটামুটি সকলেরই চেনা। কেউ নিজে ছোটবেলায় কথাটা শুনেছেন কিংবা এখন হয়তো নিজের সন্তানকে এই কথাটি বলেন। ঝালের উপকারিতার ব্যাপারে অবগত হয়ে কথাটি অনেকেই হয়তো বলেন না। শুধুমাত্র ভবিষ্যতে খেতে সমস্যা হতে পারে এই আশঙ্কাতেই সন্তানকে ছোট থেকেই ঝাল খাওয়ার অভ্যেস করতে চান।
চলুন আজ ঝাল খাওয়ার কিছু উপকারিতা এবং তার সঙ্গে সঙ্গেই ঝাল খাওয়ার কিছু অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।প্রথমে জেনে নেওয়া যাক উপকারিতার কথা....................
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের ঝাল খাওয়ার প্রবণতা কম থাকে। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মহিলাদেরই ঝাল বেশি খাওয়া উচিৎ। ত্বক ঝকঝকে রাখার জন্য ঝাল খাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে সকলেরই। অতিরিক্ত ঝাল শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। তাই পরিমিত পরিমান ঝালই শরীরের উপকার করে থাকে। অনেকসময় জ্বর কিংবা অন্য কোনো কারণে জিভের স্বাদ চলে যায়। স্বাদ ফেরানোর জন্য ঝাল খাওয়া উচিৎ। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মাথার অতিরিক্ত যন্ত্রণার সময় অনেকেই নানাধরণের পেনকিলার খেয়ে থাকেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সময় পেনকিলারের জায়গায় যদি একটি লঙ্কা খাওয়া যায় তাহলে অনেক তাড়াতাড়ি উপকার পাওয়া যায়। তবে এই ক্ষেত্রে যদি ঝাল খাওয়ার অভ্যেস একেবারেই না থাকে তাহলে সেই টোটকাটি ট্রাই না করাই ভালো। লঙ্কায় থাকে ক্যাপাইসিন নামক একধরণের প্রাকৃতিক উপাদান যা ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে। পেটের সমস্যা দূর করতেও লঙ্কার জুড়ি মেলা ভার। রক্তে কোলেস্টেরলের আধিক্য কমাতেও লঙ্কা উপকারী ভূমিকা পালন করে থাকে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, লাল লঙ্কা জানান দেয় যে তার মধ্যে কতটা পরিমান বিটা ক্যারোটিন বা প্রো ভিটামিন-এ উপস্থিত। প্রতিদিন রান্নায় দেওয়া এক চামচ লাল লঙ্কার গুঁড়ো শরীরে প্রতিদিনের প্রয়োজনের ৬ শতাংশ ভিটামিন সি এর অভাব মেটায়। লঙ্কা শরীরের থার্মোজেনেসিস বাড়িয়ে দেয়। ফলে সেই মুহূর্তে শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ বেড়ে যায় যা ওজন কমানোতে মুখ্য ভূমিকা নিয়ে থাকে।
উপকারিতা নিয়ে অনেকটা জানানো হলো। এবার চলুন এর অপকারিতা নিয়ে কিছু কথা বলা যাক................
লঙ্কা খাওয়ার নানা উপকারিতা থাকলেও বলা হয় অতিরিক্ত লঙ্কা খেলে নানা শারীরিক সমস্যা হতে পারে। লঙ্কা তার ঝাল স্বাদের কারণেই পরিচিত। অতিরিক্ত ঝাল খাওয়ার ফলে জ্বালার অনুভূতি হতে থাকে মুখে জিভে ও গলায়। যদিও এটা নতুন করে বলার কিছু নেই। যেটা অনেকের জানা নেই তা হলো, লঙ্কার মধ্যে উপস্থিত পেন রিসেপ্টরের সাথে যুক্ত ক্যাপাইসিন এই তীব্র জ্বালার সৃষ্টি করে থাকে।অল্প ক্যাপাইসিন যেমন যন্ত্রণানাশক হিসেবে কাজ করে সেরকম অতিরিক্ত পরিমান ক্যাপাইসিনই আবার বিপরীত ফল দিয়ে থাকে। অতিরিক্ত পরিমান ঝাল পেটের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। পেটে জ্বালার অনুভূতিও কিছুক্ষেত্রে সৃষ্টি হতে পারে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, যাদের ‘ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম’ রয়েছে তাদের এই কারণেই লঙ্কা বা কোনোরকম ঝালজাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকতে বলা হয়।