পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য মানব জাতির মৌলিক চাহিদা হলো খাদ্য, বস্ত্র এবং বাসস্থান। কিন্তু এই তিনটি জিনিস ছাড়াও আরেকটি জিনিস মানুষের বেঁচে থাকার পাথেয়। যার অপর নাম জীবন সেই জলই মানুষের বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। শুধু মানুষ নয় এই পৃথিবীতে অধিষ্ঠান করা সমস্ত প্রাণীদের বেঁচে থাকার জন্যই অত্যন্ত প্রয়োজনীয় জিনিস হলো জল। কিন্তু বর্তমানে নানা কারণে কমে যাচ্ছে ভূগর্ভস্থ জলের স্তর। যার ফলে আসন্ন ভবিষ্যতে এক চরম সঙ্কটের সম্মুখীন হতে চলেছে মানবজাতি। জিয়ো বাংলা শারদ সম্মান ২০১৯ অনুষ্ঠান উপলক্ষে জিয়ো বাংলার স্টুডিওতে সঞ্চালিকা নবনীতার সাথে উপস্থিত ছিলেন বেলেঘাটা সরকারবাজার বিবেকানন্দ সংঘের সদস্যবৃন্দ।
উপস্থিত ছিলেন ক্লাবের সদস্য শ্রী পার্থ সরকার, ছিলেন ক্লাবের আরেক সদস্য শ্রী অনিকেত দে এবং এই বছরের থিম শিল্পী শ্রী বিশ্বজিৎ দাস। ৭১ তম বর্ষে দাঁড়িয়ে এই ক্লাবের এবছরের থিম 'জলই জীবন'। জলের অপচয় বন্ধ করার জন্য সচেতনতা বার্তা দেওয়াই মূল লক্ষ্য এই পূজা কমিটির। কলকাতার বিখ্যাত থিমশিল্পীদের সর্বকনিষ্ঠ হলেন এই ক্লাবের থিম মেকার বিশ্বজিৎ দাস, যেভাবে দিনের পর দিন জলের অপচয় চলছে তা এইসময়ে দাঁড়িয়ে বন্ধ না করা গেলে ভবিষ্যতে অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতির শিকার হতে হবে মানবসমাজকে, বলে জানান তিনি। মণ্ডপসজ্জায় তিনি ব্যবহার করেছেন ছোটবেলায় পড়া সেই কাক ও কলসির গল্পের একটি মডেল। তার সাথে থাকছে নিত্য ব্যবহার্য কিছু সামগ্রী যেমন বালতি, মগ, হাড়ি প্রভৃতি। এর সাথে থিমটিকে আরও বাস্তবায়িত করে তোলার জন্য আবহে থাকছে জলের শব্দের নানা এফেক্ট। ক্লাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এইবছর মৃৎশিল্পীর ভূমিকায় থাকছেন শ্রী বিশ্বজিৎ পাল।
থিমের পুজোর মধ্যে দিয়েই মানুষের মধ্যে জল অপচয় বন্ধ করার বার্তা দিতে চাইছেন এই ক্লাবের সদস্যবৃন্দ। সমাজসচেতনতার বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি নিজেদের ক্লাবের পক্ষ থেকে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার দিকটিও বিশেষভাবে খেয়াল রেখেছে এই ক্লাব। তারা জানালেন, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ছাড়াও, জল, প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম এবং কোনো দর্শনার্থী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তার জন্য থাকছে একটি বেডের ব্যবস্থা। নবমীর দিন এই ক্লাবের পক্ষ থেকে ভোগের আয়োজন করা হবে। দশমীর দিন থাকছে একটি ঘরোয়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ক্লাবের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, মহালয়া থেকে পুজো প্রায় শুরু হয়ে গেলেও এই ক্লাবটি দর্শকদের জন্য তাদের মণ্ডপের দ্বার উন্মুক্ত করতে চলেছেন চতুর্থীর দিন। ভূগর্ভস্থ জলের স্তর ধীরে ধীরে কমে যাওয়ার ফলে ভবিষ্যতে ঠিক কতটা বিপদের সম্মুখীন হতে চলেছে মানবসমাজ? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে গেলে পৌঁছে যেতেই হবে বেলেঘাটা সরকারবাজার বিবেকানন্দ সংঘের পূজামণ্ডপে। দমদম বা কবি সুভাষ গামী যে কোনও মেট্রতে উঠে নামতে হবে মহত্মা গান্ধী মেট্রো-এ, সেখান থেকে অটো করে ফুলবাগানের নিকট এই পুজো মন্ডপ।