কর্ণাটকের এই গ্রামে আছে দেশের একমাত্র বিড়াল মন্দির

অলস, আহ্লাদী, হিংসুটে, ঘুমকাতুরে তার অনেক গুণ। ধবধবে লোমে ঢাকা। জ্বলজ্বলে চোখ। কারুর হলুদ, কারুর সবুজ আবার কারুর বা আশমানী। বাইরে থেকে বাড়ি ফিরলেই লেজটি উঁচিয়ে দৌড়ে আসে। গা চেটে দেয়। বাড়ির আদরের মার্জারনন্দন। তার অনেক নাম। ছোট্টটি যখন থাকে তখন নরম তুলোর বলকে এড়িয়ে যায় সাধ্য কার! মনে মায়া জাগাতে তিনি খুবই ওস্তাদ। ভাল ভাবেই জানেন গৃহকর্তা বা কর্তীর াদর কীভাবে কাড়তে হয়।

কিন্তু এহেন প্রাণীটিও কোনও কোনও সময় লোক দাঁড়িয়ে দিতে পারেন রাস্তায়। একবার রাস্তা কেটে চলে গেলে বা রাত বিরেতে কেঁদে উঠলে উৎকণ্ঠায় পড়ে মানুষজন কিছু বিপদ হবে না তো!
দুই বঙ্গেই মা ষষ্ঠীর বাহন বিড়াল। বিড়ালকে ঘিরে সংস্কার ার কু সংস্থার দুয়েরই শেষ নেই। কালো বিড়াল অশুভ শক্তির প্রতীক। তন্ত্রসাধকদের সাধনার বস্তু। নানারকম মিথ শোনা যায় কালো বিড়াল নিয়ে।

বিড়াল আসলে দক্ষিণ এশীয় সংস্কৃতির অঙ্গ। ভারতে বিড়াল পূজিত হয় দেবতারূপে। মার্জারদেবতার জন্য গড়ে উঠেছে মন্দিরও। কর্ণাটকের মার্জালপুরের কাছে বেকাল্লা গ্রাম। সেখানেই  আছে শতাব্দীপ্রাচীন বিড়াল মন্দির। সেখানে পূজিত হন দেবী মাগাম্মা ।  

তিনটি মন্দির নিয়ে গড়ে উঠেছে মূল মন্দির। বলা হয় এই মন্দির গড়ে উঠেছিল ১ হাজার বছর আগে। এই অঞ্চলের মানুষ মনে করেন তাঁদের প্রধান পূজ্য দেবী মাগাম্মা । তিনি বিড়ালের ছদ্মবেশে গ্রামে ঘুরে বেড়ান, মন্দিরে থাকেন। মানুষের কল্যাণ করেন। সব বিপদ থেকে বাঁচান।

স্থানীয় বিশ্বাস, বহু বছর আগে বিড়ালরূপেই দেবী এই মন্দিরে নাকি ভক্তদের দেখা দিয়েছিলেন। মাগাম্মার কারণেই এই গ্রামে বিড়ালদের প্রহার, আঘাত, বিতাড়ন নিষিদ্ধ। কেউ যদি বিড়াল তাড়ায় বা মারধোর করে তাহলে তাকে গ্রাম ছাড়তে হয়।

মাগাম্মা মন্দিরে প্রতিবছর মাগাম্মা উৎসব পালিত হয়। ৩-৪ দিন ধরে চলে উৎসব। পুজো হয় বিড়ালদের।

বেকাল্লা গ্রামের নামেও প্রভাব ফেলেছেন দেবী মাগাম্মা। কন্নড় ভাষায় বেক্কু মানে বিড়াল। সেই সূত্রেই বেকাল্লা। সংস্কৃততে ‘মার্জার’ শব্দের অর্থ বেড়াল। সেখান থেকেই এসেছে মার্জালপুর।

রোজ দুধ-মাছ খেয়ে যায় বলে যাদের ওপর প্রতিদিন চটে যান, বুঝতে পারছেন ভারতীয় সংস্কৃতিতে তাদের স্থান ঠিক কোথায়!    

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...