একটা সময় ছিল, যখন মানুষের মূল সঙ্গী ছিল এই প্রকৃতি। আর এই প্রকৃতিকে সাক্ষী রেখেই তৈরি হয়েছিল নানা পার্বণের। কিন্তু এই একবিংশ শতাব্দীর নগরায়ণের সময়ে বাঙালীর ১২ মাসে ১৩ পার্বণের ধারণাটিই ক্রমশ চলে যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের এই ঐতিহ্যের পার্বণগুলির অবলুপ্তি কি আমরা কোনওভাবে আটকাতে পারি না? সেই বিষয়টিকেই এবারের দূর্গাপুজোয় থিমের মাধ্যমে তুলে ধরছে বেহালা ক্লাব সার্বজনীন দুর্গোৎসব। ‘জিয়ো বাংলা শারদ সম্মান ২০১৯’-এর পুজোর আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন বেহালা ক্লাব-এর সদস্যরা। জিয়ো বাংলার স্টুডিওয়ে পুজোর আড্ডায় সঞ্চালক মৌমিতার সাথে ছিলেন দুর্গোৎসব কমিটির প্রেসিডেন্ট পার্থ চন্দ ও সম্পাদক অমিতাভ ব্যানার্জী। এবছর প্ল্যাটিনাম জুবিলিতে পড়তে চলেছে বেহালা ক্লাব সার্বজনীন দুর্গোৎসব। নিজেদের ৭৫তম বর্ষে আদি বাংলার যে সকল পুজো-পার্বণ আজকের দিনে প্রায় বিলীন, সেগুলিকে নিজেদের পুজো মন্ডপে তুলে ধরার অঙ্গীকার নিয়েছেন কমিটির সদস্যরা। আর এইবছর তাদের থিমের নাম ’৭৫-এর পার্বণ’। ২০০১ সাল থেকে থিমের পুজো শুরু করেছিল বেহালা ক্লাব সার্বজনীন দুর্গোৎসব।
এই বছর তৃতীয়ায় বেহালা ক্লাবের দুর্গোৎসবের শুভ উদ্বোধন হতে চলেছে। প্রতিমা শিল্পী অমর পাল ও থিম শিল্পী অদিতি চক্রবর্তীর সৃজনশীলতায় বিশেষ চমক দিতে চলেছেন পুজো কমিটির সদস্যরা। যারা বাংলা লোকসঙ্গীতের বিশেষ ভক্ত তাদের জন্য নিঃসন্দেহে বেহালা ক্লাব একটি ‘মাস্ট ভিজিট’। কারণ পুজোর চার দিন ভাদু, টুসু, ঝুমুর ইত্যাদি বাংলার প্রাচীন লোকসঙ্গীত গাইবেন বিশিষ্ট লোকসঙ্গীত শিল্পীরা। এছাড়া পুজোর সময় সুরক্ষার বিশেষ ব্যবস্থার আয়োজন করতে চলেছে বেহালা ক্লাব। পাশাপাশি পুজোয় ঘুরতে আসা বয়স্ক মানুষ ও শিশুদের জন্য আলাদা তিনটি গেটের আয়োজন করবে তারা। আর অন্যান্যবারের মত এবারেও একাদশীতে মা দূর্গার বিসর্জন করবে তারা। সুতরাং একাদশী পর্যন্ত শহরবাসীদের কাছে বড় সুযোগ বেহালা ক্লাবের পুজো দেখে আসার।
কিভাবে যাবেন বেহালা ক্লাব, এটাই নিশ্চই মাথায় ঘুরছে এখন। খুব সোজা! দমদম বা কবি সুভাষগামী যে কোনও মেট্রোয় নামতে হবে রবীন্দ্র সরোবর, সেখান থেকে বেহালাগামী কোনও বাস ধরে নামতে হবে বেহালা থানা সংলগ্ন বনমালী নস্কর লেনে কিছুটা হেটে গেলেই পৌছে যাবেন বেহালা ক্লাবে।