প্রেমে পড়া যতই বারণ হোক হৃদয় কি শোনে সেই কথা? প্রিয়জন সামনে থাকলে হাতে হাত না রাখলে কি শান্ত হয় সেই অবাধ্য মন? নিশ্চই নয়। কিছু সময় আমরা কেবল নিজেদের ভালোবাসা প্রকাশের জন্যই সঙ্গীর হাতে হাত রেখে থাকি। কিন্তু সঙ্গীর হাতে হাত রাখলে যে নানা শারীরিক অসুস্থতা কমে যায় তা কি জানা আছে? না না, এই কথা আমি বলছি না। বলছেন বিশিষ্ট চিকিৎসকগন। কি বলছেন তারা এই ব্যাপারে চলুন জানা যাক...............
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, হাত ধরার মধ্যে যেমন আনন্দ লুকিয়ে থাকে সেরকমই হাত ধরার ফলে উন্নত হয় মানসিক স্বাস্থ্য। কিভাবে? মানে প্রেম বলুন বা ভালোবাসা, প্রিয়জন সামনে থাকলে মনে যে অদ্ভুত শান্তি আসে সেই শান্তির ফলেই মস্তিষ্কের পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে ক্ষরণ হতে থাকে অক্সিটোসিন নামক একটি হরমোনের। এই হরমোনটিকে সাধারণত 'লভ হরমোন' বলা হয়ে থাকে। মনে প্রেমের উষ্ণভাব জাগিয়ে তুলতে এই হরমোনটির গুরুত্ব কিন্তু অপরিসীম।
অন্যদিকে, প্রিয়জন সাথে থাকলে হৃদরোগ থেকে শুরু করে বাতের ব্যথা, স্ট্রেস প্রভৃতি রোগ শরীর থেকে দূরীভূত হয়ে থাকে। হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন। এমনটাই দাবি করছেন মনোবিজ্ঞানীরা। লস অ্যাঞ্জেলস-এর ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির গবেষকদের সমীক্ষায় ধরা পড়েছে এরকমই কিছু তথ্য। এই গবেষণার জন্য মনোবিজ্ঞানীগণ কয়েক হাজার দম্পতির উপর একটি পরীক্ষা চালান। সেই পরীক্ষায় দেখা যায়, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা দম্পতিদের মধ্যে ৭৫% দম্পতি যারা একে অপরের হাতে হাত রাখতে অভ্যস্ত তাদের মধ্যে মানসিক বোঝাপড়া ঠিক থাকে। আর মানসিক বোঝাপড়া ঠিক থাকলে সেই সংসারে স্বাভাবিকভাবেই অশান্তি কম থাকে। আর অশান্তি যত কম মানসিক শান্তি ততবেশি আর শরীর স্বাস্থ্য তাতেই সবথেকে বেশি ভালো থাকে। মনোবিদরা জানাচ্ছেন, হারিয়ে যাওয়া বিশ্বাস আর আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার অন্যতম সহজ একটি উপায় হলো এটি।
প্রেম যে শুধু মন ভালো করে তা কিন্তু নয়। শরীর ভালো করতেও প্রেমের ভূমিকা অপরিসীম। অক্সিটোসিন বা ফিল গুড হরমোন ব্যথা কমানোর ক্ষেত্রে মরফিনের থেকেও অধিক মাত্রায় কাজ দেয়। গবেষণায় দেখা গেছে, সারাদিনের মধ্যে অন্তত ১০ মিনিট যদি সঙ্গীর হাত ধরে রাখা যায় তাহলে ব্যথাবেদনায় ভোগার আশঙ্কা ৬৫% কমে যায়। প্রায় ১২০০ দম্পতির উপর পরীক্ষা চালিয়ে এই সিদ্ধান্তে আসেন বিজ্ঞানীরা। এছাড়াও বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, হাতে হাত রাখার অভ্যেস রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে থাকে। আর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকার অর্থ হলো হার্ট সুস্থ থাকা।
তাহলে খোঁজ পেলেন সুস্থ থাকার নতুন চাবিকাঠির। শরীর সুস্থ রাখতে রোজ সঙ্গীর বা প্রিয়জনের হাত তো ধরে যায়। কি বলেন....................