শরীর বাধ সাধছে প্রতি পদে| কিন্তু মনের জোর অদম্য|
ষোড়শী সাফিয়ার এখন পাখির চোখ দশম শ্রেনীর বোর্ড পরীক্ষা | গত পাঁচ বছর ধরে বিরল ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত উত্তর প্রদেশের বেরেলির বাসিন্দা সাফিয়া জাভেদ| স্বাভাবিকভাবে ফুসফুস দিয়ে বাতাস নেওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে সে| গত দেড় বছর ধরে কৃত্রিম অক্সিজেন সিলিন্ডার থেকে শ্বাস নিচ্ছে সাফিয়া| এক মুহুর্তের জন্য অক্সিজেন বন্ধ করা যায়না| সাফিয়ার জীবনের প্রথম বোর্ড পরীক্ষায় সঙ্গী সেই অক্সিজেন সিলিন্ডার| এতবড় শারীরিক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও দমানো যায়নি মেধাবী এই ছাত্রীকে| তাই উত্তরপ্রদেশের মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রাইভেটে পরীক্ষা দিচ্ছে সাফিয়া। তাকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে অক্সিজেনের সিলিন্ডার নিয়ে পরীক্ষার হলে ঢোকার।
ছোট্ট থেকেই পড়াশোনায় প্রবল উত্সাহ ছিল সাফিয়ার| পাঁচ বছর আগে হঠাৎ করে গল ব্লাডারে স্টোন থাকায় অস্ত্রোপচার করতে হয় সাফিয়ার। কিন্তু রোগ পিছু ছাড়ল না একরত্তি মেয়েটাকে| এক বছর পরই আবার টিবি রোগ ধরা পড়ে তার । চিকিত্সায় শুরুতে সাড়া দিলেও পরে জানা যায় তার পালমোনারি টিউবারকিউলোসিসে আক্রান্ত হয়েছে। হঠাৎ হঠাৎ করেই ফুসফুসে জল জমে যায়। তখন আবার সব বন্ধ| বহু দিন শয্যাশায়ী থাকার পর ধীরে ধীরে ফের পড়াশোনা শুরু করে সাফিয়া।নতুন করে শুরু করতে হয় সবকিছু| বার বার পিছিয়ে পড়েও রোখা যায়নি তাকে|
বরাবরই ক্লাসে ফার্স্ট হয়ে এসেছে তার মেয়ে, সাফিয়ার বাবা সরভর জাভেদ একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে জানিয়েছেন| মেধাবী হওয়ার পাশাপাশি সে কঠোর পরিশ্রমী বলে মেয়েকে উল্লেখ করেছেন সরভর| তিনি বলেছেন গত পাঁচ বছরে ওর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হওয়ায় বার বার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে সফিয়াকে| সেজন্য তাই নিয়মিত স্কুল করা সম্ভব হচ্ছিল না। কিন্তু মেয়ের পরিশ্রম ও মনের জোর দেখে তিনি নিশ্চিত বোর্ডের পরীক্ষায় সাফিয়া খুব ভালো ফল করবে।