চর্মনগরী বানতলা রাজ্য সরকারের উদ্যোগে এখন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের চর্ম ব্যবসায়ীদের কাছে লাভজনক গন্তব্যস্থলে পরিণত হয়েছে। গত মঙ্গলবার ২৫ জন চর্ম ব্যবসায়ীর হাতে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র জমির কাগজ তুলে দেন। এই ২৫ জন চর্ম ব্যবসায়ীর ভিতর ১৩ জনের প্রধান ব্যবসা রয়েছে চেন্নাই ও কানপুরে। এদের ভিতরে রয়েছে ভারতের সব থেকে বড় ট্যানারি সংস্থাও। কলকাতা থেকে ১২ জন চর্ম ব্যবসায়ীকেও এই দিন জমির কাগজ তুলে দেওয়া হয়|চর্মনগরী বানতলাকে বিশ্বের সর্ব বৃহৎ লেদার-এর কেন্দ্রস্থল হিসেবে তৈরী করতে চায় রাজ্য সরকার বলে জানিয়েছেন শিল্প মন্ত্রী অমিত মিত্র। এই লক্ষ্যেই তাঁরা গত তিন বছর ধরে কাজ করে আসছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী এগিয়ে যাওয়ার জন্য সবুজ সংকেত দিয়েছেন।
চর্মনগরী এমন একটি স্থল যেখান থেকে সরাসরি বা আনুষাঙ্গিক ভাবে প্রায় ৫ লক্ষ মানুষের জীবিকা নির্বাহ হয়ে চলেছে। এই সংখ্যা ভবিষ্যতে ৬ থেকে ৭ লক্ষে পৌঁছবে বলে আশাবাদী শিল্প মন্ত্রী। বিশ্ব বঙ্গ সম্মেলনে সম্প্রতি কলকাতা-কাঁপর-চেন্নাই এর সবথেকে বড় ট্যানারি সংস্থাকে বানতলায় জমি দেওয়া হয়েছিল বলে জানান তিনি। তিনি আরো জানিয়েছেন বানতলাতে স্থান চেয়ে আরো কিছু ট্যানারি শিল্প সংস্থার আবেদন এসেছে রাজ্য সরকারের কাছে।
অনুষ্ঠানের প্রথম বানতলায় কানপুরের একটি ট্যানারি সংস্থা জমির কাগজ গ্রহণ করে। তাদের পক্ষ থেকে জানা যায়, তারা তিন হাজার বর্গমিটার জায়গা পেয়েছেন বানতলায়। এই সংস্থাটির ডিউটি ইউনিট ইতিমধ্যে সক্রিয় রয়েছে এ রাজ্যেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগ কে সাধুবাদ জানায় সংস্থাটি। কানপুরে গঙ্গা কিনারে ট্যানারি বিস্তৃতির অনুমতি পাওয়া যাচ্ছে না বিশেষত কুম্ভমেলার জন্য তিন মাসের জন্য অনুমতি দেওয়া বন্ধ করা হয়। সংস্থাটির কর্নধার এম রাজিউদ্দিন জানিয়েছেন তাদের ট্যানারির ব্যবসায় ছড়িয়ে আছে স্পেন, চিন ,দক্ষিণ আফ্রিকা এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত-এও।
উত্তর ভারতের তুলনায় কলকাতাই এখন চর্ম শিল্পের গন্তব্যস্থল হয়ে উঠেছে বলে অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। ৫৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজ্য সরকার বানতলা চর্ম নগরীর পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং সংস্কার করেছে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী অমিতবাবু। এর ভিতর ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিক পাইপ লাইন তৈরী হচ্ছে প্লান্টের লবনাক্ত জল নদীতে ফেলার জন্য। ক্ষতিকর পলি তুলে ফেলার জন্য 'টক্সিক ডাম্পিং প্লেস'ও তৈরী করে দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি ক্ষুদ্র ট্যানারি শিল্প বাব্যসায়ীদের পুনর্বাসন করতে রাজ্য সরকার ব্যয় করেছে ৪৩ কোটি টাকা। এখানকার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সংস্কার করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে ব্যয় হবে ২৬ কোটি টাকা। ট্যানারি শিল্পের জন্য আধুনিক ডিজাইনিং সেন্টার তৈরী করতে ব্যয় হতে পারে ২৩ কোটি টাকা। এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও সার্ভিস সেন্টার তৈরিতে ব্যয় করা হবে ১৩ কোটি টাকা।