শহর কলকাতায় আরাধিত হয়ে আসছেন বনদেবী। ১৯৫১সন থেকে কলকতার বিজয়গর শ্রীকোলনির দ্বাদশ অবতার বারো ভূতের মন্দিরে আরাধ্য বনদেবী। স্থানীয়দের কাছে বুড়িমা বা বনদুর্গা নামেও পরিচিত এই বনদেবী। কিন্তু জানেন, এই দেবীর প্রসাদ কি? মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে সকাল থেকে বিকেল ৩টের ভিতর বনদেবীর প্রসাদ হিসেবে জড়ো হল ৬০ হাজার হাঁসের ডিম। এরপর সময় গড়াতেই লাখের কোঠা ছাড়িয়ে যায় হাঁসের ডিমের সংখ্যা। বারোভূতের পুজোর আগের দিনই অনুষ্ঠিত হয় বন দেবীর পুজো।
সাধারণত সুন্দরবন বা আঞ্চলিক এলাকাগুলিতেই বনদেবীর আরাধনা হয়ে আসছে । বন দেবী, বোনের সকল পশু পাখি এমনকি বনে আগত সকল মনুষ্য সন্তান কে রক্ষার দায়িত্ব নেন, এমনটাই বিশ্বাস ভক্তজনের। কথিত আছে, বন দূর্গা একবার বৃদ্ধা ভিখারি সেজে খুব দরিদ্র ঘরে গেছিলেন ক্ষুদা মেটাতে, সে বাড়িতে তার আপ্যায়ন হয়েছিল হাঁসের ডিম দিয়ে। তাতে তৃপ্ত হয়েছিলেন বন দূর্গা। লোকমুখে প্রচলিত কাহিনীর রেশ নিয়েই আজও হাসির ডিম দিয়ে মানত করে আহবান জানানো হয় বন দূর্গা বা বন দেবী কে।
দেশ ভাগের পর চলে আসা ছিন্নমূল মানুষেরা অনেকেই বসতি তৈরী করেন বাঘাযতী-যাদবপুর এলাকায়। দেশ পাল্টে গেলেও ঐতিহ্য সাথে নিয়ে এসেছেন অনেকেই। বিজয়গড়ের বনদেবী আর বারো ভূতের আরাধনার রীতিও এমনি করে নিয়ে এসেছিলেন এখানকার বাসিন্দারা। বনদেবীর পূজা শেষে কাঁচা ডিম প্রসাদী স্বরূপ বিতরণ করা হয় ভক্তদের মাঝেই। ভক্তদের প্রতি শুধু অনুরোধ থাকে প্রসাদী ডিম রান্নায় যেন পেঁয়াজ রসুনের ব্যবহার না থাকে। পুজোর উদ্যোক্তারা জানান মায়ের আরাধনার মাধ্যমে জনসেবা করাও তাদের উদ্দেশ্য।