প্রায় ৩০০ বছর ধরে বালুরঘাটে হয়ে আসছে এই পুজো। দেখা গিয়েছে যে এখানে সাতটি কালীর একসঙ্গে পুজো হয়। এই পুজো করে আসছেন ডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের মাহিনগর এলাকার গ্রামবাসীরা।
এই পুজোর বিশেষত্ব হল যে ওই এলাকায় একজন পুরোহিতই সাতটি মণ্ডপে থাকা সাত কালীর পুজো করেন। যদিও বর্তমানে এই সাত কালীর মধ্যে একটি কালী পুজো বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আবার এখানে সারাদিন পুজো করার পরে সেদিনই বিসর্জন হওয়ার রীতি রয়েছে।
এই পুজো আজ থেকে প্রায় ৩০০ বছর আগে ওই এলাকার সুকুল জমিদার শুরু করেন। একজন পুরোহিত পুরো এলাকা ঘুরে সাত কালীর পুজো সারতেন এবং সবশেষে ঘাটকালীর পুজো করতে গিয়ে সকাল হয়ে যেত। সেই থেকেই আজও ঘাটকালীর পুজো সকালেই করা হয় এবং বিকেল পর্যন্ত চলে।
এই পুজোর আরেক বিশেষত্ব হল যে কালীপুজোর রাতে অন্যান্য কালীপুজো হওয়ার পরের দিন ঘাটকালীর কাছে সব কালী প্রতিমা জমায়েত হয়। সেদিন বিকেলেই সব কালী একসঙ্গে বিসর্জন দেওয়া হয়।
তবে বর্তমানে সন্ন্যাসকালী মণ্ডলপাড়ার জায়গা সরকারি কৃষি ফার্মের অধীনে চলে গিয়েছে। তাই পুজো উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন যে এই পুজো বন্ধ হয়েছে।
প্রতিবছর ঘাটকালী পুজোতে মেলা বসে ও প্রচুর মানুষের ভিড় হয়। এলাকাবাসীদের মতে তারা এই সাত কালীকে সাত বোন হিসেবেই দেখেন।
এলাকার স্কুল মোড়ে রয়েছে বামাকালী, সেন্ট পিটার্স এলাকায় সুরকালী, মাহিনগর এলাকায় চন্ডী কালী, নদীর পাড়ে নির্দয়া কালী, মিশন এলাকায় বুড়াকালী, সন্ন্যাস কালী ও বিসর্জনের ঘাটে ঘাট কালী।
স্থানীয়দের বিশ্বাস অনুযায়ী এই সাত কালীমাতা সাত বোন এবং তার মধ্যে সবচেয়ে ছোট বোন হল ঘাটকালী। তাই রীতি অনুযায়ী তার পুজো সবার শেষে করার হয়ে আসছে। এই সাত কালীপুজোর প্রতিষ্ঠাতা নদীতে প্রতিমা বিসর্জন করতেন না। নদীর ধারে একটি পুকুর কেটে সেখানে বিসর্জন দেওয়ার রীতি চালু করেছিলেন। এবছরও সারারাত ধরে একজন পুরোহিত এই সব কালী পুজো করেন বলে ঘাট কালীর পুজো পরের দিন সকালে হয়। সে দিনই সন্ধ্যায় সব কালী প্রতিমা এসে ঘাটকালী এলাকায় জমা হবে। তখনই পুরনো সেই নিয়ম মেনে তাদের একসঙ্গে বিসর্জন দেওয়া হয়।