একটা সময় ছিল যখন বাংলার মানুষদের বিনোদনের একমাত্র উপায় ছিল লোকশিল্প। তৎকালিন গ্রাম বাংলায় কোনও মেলা বসা মানেই তাতে থাকবে ছৌনাচ, যাত্রাপালা, পথনাটিকা, পুতুল নাচ সহ আরও অনেক কিছু। তবে সময় পাল্টেছে আর তার সাথে সাথে পাল্টেছে মানুষের দৃষ্টিভোঙ্গী। তাই হারাতে বসেছে অনেক লোকশিল্প। মোবাইল ফোন আর স্যাটেলাইট টিভি-র আগমনে মানুষের চোখ আটকে গেছে স্মার্ট ফোনের পর্দায়। এমনকি কিছু জানার জন্য বর্তমানে মানুষের একমাত্র সম্বল হয়ে উঠেছে গুগল, আত্মীয় পরিজনদের খোঁজ নেওয়ার জন্য এখন আর কষ্ট করে সেই আত্মীয়ের বাড়ি যেতে হয় না, সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইটেই খোঁজ নেওয়া যায় তার। হাতের সামান্য নারাচাড়ায়, হাতের মুঠোয় চলে আসছে পৃথিবীর প্রত্যেকটি কোনে ঘোটে যাওয়া বেশ কিছু ঘটনা। তাই হারিয়ে যাওয়া লোকশিল্পকে পুনরুদ্ধার করতে লোকশিল্প নিয়েই সেজে উঠছে বাঘাযতীন বিবেকানন্দ মিলন সংঘের পূজা মন্ডপ। শিল্পী গিরিশ ঘোষের ভাবনায় নতুন করে মানুষের কাছে ধরা দেবে বাংলার লোকশিল্প।
জিয়ো বাংলা শারদ সম্মান ২০১৯ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ক্লাবের সম্পাদক অপু সাহা, থিম শিল্পী গিরিশ ঘোয ও মহিলা সদস্য সর্বাণী সাহা। সঞ্চালক শ্রেষ্ঠার সাথে তাদের পুজোর বিষয় জানলাম আমরাও। এবছর তাদের পুজো ৭০তম বর্ষে পর্দাপন করল, তাই প্রত্যেকবছরের মত এবছরও দর্শনার্থীদের জন্য থাকবে নতুন কোনও চমক। পাঁচ বছর হল সাবেকিয়ানা ছেড়ে থিমে প্রবেশ করেছে এই ক্লাব আর এই পাঁচ বছরেই বাঘাযতীন এলাকায় এক বিখ্যাত পুজো হয়ে উঠেছে বাঘাযতীন বিবেকানন্দ মিলন সংঘ।
সারাবছরই পুজো কমিটির তরফ থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ঠিকই, তবে তাদের মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য হল আলপোনা প্রতিযোগিতা, যা আর কোথাও প্রায় হয়না বলেই দাবি করেন সম্পাদক অপু সাহা। তৃতীয়ায় উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় তাদের দুর্গোৎসবের পথচলা যা সিদুঁর খেলা দিয়ে শেষ হয় একাদশীতে। অষ্টমি ও নবমীতে পূজা কমিটির তরফ থেকে আয়োজন করা হয় অন্ন ভোগের, যা ক্লাবের মহিলা সদস্যরা হাতে হাতে পৌঁছে দেয় পাড়ার সকল গৃহে।
তাছাড়া সকল দর্শনার্থীদের জন্যও থাকে সামান্য ভোগের ব্যাবস্থা। তাই আপনারাও যদি নতুন করে একবার বাংলার লোকশিল্পের সাথে পরিচিতি ঘটাতে চান তাহলে অবশ্যাই একবার আসতে হবে এই পূজা মন্ডপে।