রণে, বনে, জলে জঙ্গলে ভগবানের দেখা মেলার সাথে সাথে আর যে জিনিষটির দেখা মেলে তা হলো ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার। পৃথিবীতে এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে ব্যাকটেরিয়া পৌঁছতে পারে না। এমনকি পৃথিবীর বাইরে সুদূর মহাকাশেও ব্যাকটেরিয়ার অবাধ বিচরণ। সেই ব্যাক্টেরিয়ারই এবার খোঁজ মিললো মহাকাশ গবেষণার একটি কেন্দ্রে। সেই কেন্দ্রটি আবার পৃথিবীর কক্ষপথ ধরে অনবরত ঘুরে চলেছে। সেই কেন্দ্রের মধ্যেই মিলেছে ব্যাকটেরিয়ার অস্তিত্ব। তবে মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের ঘরে ব্যাকটেরিয়া কোথা থেকে এলো তাই নিয়ে গবেষণা কম হয়নি। মহাকাশবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, যত দ্রুত সম্ভব এই ব্যাকটেরিয়া কোথা থেকে এলো তা জানতে হবে। কারণ নভোশ্চররা যখন বেশিদিনের জন্য মহাকাশ সফরে যায় তখন তাদের এই কেন্দ্রেই থাকতে হয়। তাই এতে যদি ব্যাকটেরিয়া থেকে থাকে তাহলে নভোশ্চরদের শরীরে নানা রোগের আক্রমণ ঘটতে পারে। তাছাড়া যেহেতু মহাকাশ পৃথিবী থেকে অনেকটাই দূরে তাই সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসক বা হাসপাতাল কোনোটিই সহজে পাওয়া যাবে না। তাই এই বিষয়ে আগে থেকে নিরাপত্তা গ্রহণ করে তবেই নভোশ্চরদের মহাকাশে পাঠানো উচিত, জানালেন নাসার জেট প্রপালসন ল্যাবের একজন গবেষক।
গত ১৪ মাস ধরে এই কেন্দ্রের বিভিন্ন ঘরে যেমন শৌচালয়, জানলা, খাবার টেবিল এবং শোয়ার ঘর প্রভৃতি ঘর থেকেই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেইসব নমুনা থেকে 'জিন সিকুয়েন্সিং' এবং 'কালচার' এই দুই পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়। মহাকাশে প্রাপ্ত ব্যাকটেরিয়া কোনোভাবে নিজের চরিত্র বদল করেছে কিনা তা জানার জন্যই এইসব পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, যে ব্যাকটেরিয়া মহাকাশে পাওয়া গেছে সেইগুলি মানুষের সংস্পর্শে থাকা কিছু ব্যাকটেরিয়া যেমন, স্টেফাইলোকক্কাস, ব্যাসিলাস প্রভৃতি। এই স্টেফাইলোকক্কাস ব্যাকটেরিয়া থাকে মানুষের হাতে, নাকে এবং ত্বকে। অন্যদিকে ব্যাসিলাস এবং এন্টেরোব্যাকটর আবার থাকে অন্ত্রে। এইসব ব্যাকটেরিয়া সাধারণত স্কুল,কলেজ অফিস কাছারীর মতো জায়গায় যেখানে নানারকমের মানুষ একসাথে যাতায়াত করে সেখানেই বেশি থাকে। এই ব্যাকটেরিয়া মহাকাশে কিভাবে পৌঁছলো এই নিয়েই নতুন করে আবার গবেষণা শুরু হয়েছে।
ব্যাকটেরিয়ার মহাকাশযাত্রা এবার নতুন করে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে গবেষকদের কপালে। এই ব্যাকটেরিয়ার মহাকাশযাত্রার ফলে যদি কোনো নভোশ্চর অসুস্থ হয়ে পড়েন তখন কি হবে সেই ভেবেই এখন উদ্বেগে রয়েছেন নাসার গবেষকগণ।