প্রায় এক বছর টালবাহানার পর অবশেষে দক্ষিন দিনাজপুর জেলায় গড়ে উঠছে আয়ুষ গ্রাম। ডিসেম্বর মাসেই আয়ুর্বেদিক মডেল গ্রাম তৈরী করতে ময়দানে নামছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। আয়ুষ গ্রাম তৈরির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে ১০ লক্ষ টাকার বরাত পেয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। চলতি মাস থেকেই এ বিষয়ে সচেতনতা প্রচারে নামবে স্বাস্থ্য দফতর। সভা করা হবে গ্রামবাসী ও বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিদের নিয়ে। জেলার সীমান্ত ব্লক হিলির বিনশিরা গ্রাম পঞ্চায়েতের ফেরুসা গ্রামকে মডেল গ্রাম হিসেবে চিহ্নিত করলেও গোটা বিনশিরা গ্রাম পঞ্চায়েতকেই আয়ুষ গ্রাম হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করবে স্বাস্থ্য দফতর।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, গ্রামের বাসিন্দাদের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা ও যোগশাস্ত্র সম্পর্কে সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলাই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে জানান, অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসার খরচ ও ঝক্কি এড়াতে এখন প্রচুর মানুষ আয়ুর্বেদিক ও যোগ চিকিৎসার দিকে ঝুঁকছেন। আয়ুষ গ্রামের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে জেলায় আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় নতুন দিগন্ত খুলে যাবে। শুধুমাত্র গ্রামই নয়, মডেল আয়ুষ আউটডোর গড়তেও উদ্যোগী হয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। বালুরঘাট সদর হাসপাতালে আয়ুর্বেদ, হোমিওপ্যাথি আউটডোর থাকলেও বিনশিরার তিনটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আয়ুর্বেদ, হোমিওপ্যাথ, যোগ ও ইউনানি আউটডোর খোলারও পরিকল্পনা রয়েছে। সারা বছর ধরে একটি করে প্রত্যেক মাসে স্বাস্থ্য শিবির করানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়াও গ্রামবাসীদের মধ্যে বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক গাছ বিতরণ, সেই গাছ লালন-পালনে গ্রামবাসীদের উৎসাহিত করার পাশাপাশি এই গাছগুলি সম্পর্কে সচেতন করা এবং বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়াদের মধ্যে আয়ুর্বেদ বিষয়ক প্রশিক্ষণও দেবে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। এই কারনে স্থানীয় ৫টি স্কুলকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা মেনে গত বছর প্রতি গ্রামে আয়ুষ গ্রাম গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিল রাজ্য সরকার। স্বাস্থ্য ভবন থেকে সব জেলায় এই মর্মে চিঠিও গিয়েছিল। কিন্তু তারপর কাজে ঢিলেমি চলে আসে। এই প্রকল্প অনুসারে প্রত্যেক মডেল গ্রামে বিভিন্ন রকম ওষধি গাছ যেমন অর্জুন, হরিতকি, হেনা, ব্রাহ্মী, অশ্বগন্ধা, ঘৃতকুমারী, সিঙ্কোনা, ক্যালেন্ডুলা, বাসক, বাবলা, কালমেঘ, নিম, আমলকি প্রভৃতির চাষ করা হবে। সেই গাছ থেকে ওষুধ উৎপন্ন করে গ্রামের মানুষদের পরিষেবায় লাগানো হবে।