কাজের অভাবে নিজের পছন্দের পেশা ছেড়ে অন্য পেশাকে নিজের করে নিয়েছেন, এমন মানুষের অভাব নেই দুনিয়ায়। কিন্তু বাংলা টেলিভিশনের জনপ্রিয় ধারাবাহিকের পরিচালকও যে এই দলে নাম লেখাতে বাধ্য হবেন, এমন কে ভেবেছিল! কিন্তু এমনটাই হয়েছে পরিচালক অয়ন সেনগুপ্তের সাথে। এককালে জনপ্রিয় সিরিয়াল ডিরেক্ট করে যিনি বাংলা দর্শকের মনরঞ্জন যুগিয়েছেন, আজ তাঁর রাস্তার উপরে অস্থায়ী খাবারের দোকান।
‘কে আপন কে পর’, ‘কী করে বলব তোমায়’, ‘এই পথ যদি না শেষ হয়’ – এই সিরিয়ালের নাম মনে করতে বাঙালি সিরিয়ালপ্রেমী দর্শকদের খুব বেশি কষ্ট করতে হয়না। কারণ দীর্ঘ সময় ধরে বাঙালির ঘরে ঘরে চলেছে এই ধারাবাহিকগুলির টানটান উত্তেজনা। আর সেই ধারাবাহিকেরই সফল পরিচালক অয়ন সেনগুপ্ত। কিন্তু সত্যিই কি তিনি একজন সফল পরিচালক হতে পেরেছেন? নিজেকে হয়ত তিনি এই প্রশ্ন বহুবার করেছেন। কারণ, পরিচালনা যার পেশা ও নেশা – তাঁকে সংসার চালানোর জন্য অস্থায়ী খাবারের দোকান চালাবার সিদ্ধান্ত নিতে হলে, তাঁর মনে এই প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক।
তপন থিয়েটারের সামনে ফুটপাথের উপরে ‘গার্ডেন আমব্রেলা’। আর সেখানেই ওভেন সহ যাবতীয় উপকরণ সাজিয়ে ক্রেতার অপেক্ষায় রয়েছেন মালিক। মেনুতে ঘুঘনি, ভেজিটেবল চপ এবং আরও অনেক কিছু রয়েছে। কড়াইয়ে ফুটন্ত তেলে গরম গরম চিকেন পকোড়া ভাজছেন অয়নের অভিনেত্রী স্ত্রী। বর্তমানে তিনি স্টার জলসার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘গীতা এলএলবি’তে কাজ করছেন। কিন্তু এত অল্পতে সংসার চলেনা। স্ত্রী, এক সন্তান নিয়ে সংসার অয়নের। ছেলে খুবই ছোট। সোমবার একটি ভিডিয়ো বার্তায় সমাজমাধ্যমে তিনি নিজের এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে বলেছেন, দীর্ঘ দিন ধরে হাতে কাজ নেই। সেই কারণেই, ফুটপাথে খাবারের দোকান দিতে বাধ্য হলেন তিনি!
অয়নের ভিডিয়ো দেখে বাংলা বিনোদন দুনিয়ার বহু পরিচিত মুখ সেখানে নিজেদের সমবেদনা জানিয়েছেন। কেউ কেউ আবার অয়নের এই লড়াকু মনোভাবের জন্য তাঁকে কুর্নিশও জানিয়েছেন। এবিষয়ে পরিচালক গিল্ডের একাংশ জানিয়েছেন, ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ কমার কারণেই পরিচালক বা টেকনিশিয়ানদের এমন অবস্থার সম্মুখীন হতে হয়। অয়ন অনিয়মিত হয়ে পড়ায় তাই সমস্যায় পড়েছেন।
তবে অয়নের মতে, অভাব সত্ত্বেও নিজের পছন্দের পেশাকে ছাড়বেন না তাঁরা। এই বিকল্প আয়ের পথে চললেও আবারও নতুন কাজের সুযোগের অপেক্ষা করবেন।