দুর্গা পুজোর পর থেকেই বদলাতে থাকে মরসুম। গরম থেকে ক্রমশ শীতের দিকে। বদলে যায় বাতাসের চরিত্র। ধূলোর ভাগও বেড়ে যায়। হাঁপানি বা অ্যাজমার সমস্যা বাড়ে। শীতকাল অ্যাজমা রোগীদের জন্য বেশ কষ্টকর। বছরের অন্যান্য সময়ের থেকে এই সময়টায় অ্যাজমা রোগীদের একটু বেশি সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। সারা বিশ্বের প্রায় ১৫ কোটিরও বেশি মানুষ অ্যাজমাতে আক্রান্ত হন। শীতে অ্যাজমা বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণগুলো হল- এই সময়ে ঠাণ্ডা, জ্বর, শুষ্ক বাতাস যা শ্বাসতন্ত্র সংকুচিত করে, শীতে বেড়ে যাওয়া ধুলো ও ধোঁয়ার পরিমাণ, কুয়াশা ও বদ্ধ গুমোট পরিবেশ। ইনহেলার হয়ে ওঠে নিত্য সঙ্গী।
অ্যাজমা ফুসফুসের সমস্যা। অ্যাজমায় ফুসফুসে কোনও একটি কারণে প্রদাহ হয়, তখন ফুসফুসের ভিতর এয়ারওয়েতে বাধা তৈরি হয়ে যায়। ফলে মানুষের শ্বাস নিতে হয় অসুবিধা হয়। অ্যাজমা দুই ধরনের আছে- ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা ও কার্ডিয়াল অ্যাজমা। ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা ও কার্ডিয়াক অ্যাজমা দুটোর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা হল শ্বাসনালীর প্রদাহ। শ্বাসনালীর প্রদাহের কারণে যে শ্বাসকষ্ট হয়, সেটি ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা। আর কার্ডিয়াক অ্যাজমা হল একিউট লেফ্ট ভেন্টিকুলার ফেইলিউর। হার্টের জন্য কার্ডিয়াক অ্যাজমা। ব্রঙ্কাসের জন্য ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা।
ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমার লক্ষণ
রোগীর শ্বাসকষ্ট থাকে। শ্বাসকষ্টের আবার রকম ফের আছে। হঠাৎ করে বেশি শ্বাসকষ্ট হতে পারে। আবার কিছু ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট আছে, তার সঙ্গে শুকনো কাশি থাকতে পারে। সঙ্গে জ্বরও আসতে পারে। রোগী ঘন ঘন শোঁ শোঁ শব্দে নিঃশ্বাস ফেলে। এ ছাড়া বুকে টান ধরা বা চাপ সৃষ্টি হওয়া এবং কাশির ফলে ফুসফুস থেকে থুতু উৎপন্ন হওয়াও এই ধরনের অ্যাজমার লক্ষণ।
সাধারণত পরিবেশের কারণে এ ধরনের অ্যাজমা হয়। আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে কিংবা ভাইরাল ইনফেকশনের কারণেও হতে পারে। সেই সাথে কিছু কিছু খাবারের কারণেও এই অ্যাজমা হয়। ধূমপানও হয়ে উঠতে পারে সমস্যার কারণ।
অ্যাজমার সংকট থেকে বাঁচতে ধূমপান ও অন্যান্য তামাক জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার করা যাবে না। ধুলাবালি থেকে নিজেকে দূরে রাখুন। যে খাবারে অ্যাজমা বাড়ে সেগুলো এড়িয়ে চলুন। অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
আনন্দলোক হসপিটালের পালমোলজি বিভাগে বিশেষজ্ঞ পালমোলজিস্ট আছেন অ্যাজম ও ফুসফুস সংক্রান্ত সমস্যার চিকিৎসার জন্য। এ সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য পাবেন চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট এবং হেল্পলাইনে।