আস্থা বিনায়ক হল মহারাষ্ট্রের আট বিখ্যাত গণপতি মন্দির। আস্থা বিনায়ক যাত্রায় ভক্তরা একসঙ্গে এক যাত্রায় এই আট মন্দির তীর্থ দর্শন করেন। মহারাষ্ট্রের আহমেদনগর, রায়গড় এবং পুণের মধ্যে অবস্থিত এই আট মন্দির। সেই আট মন্দিরের বিশদ তথ্য দেওয়া হল এই নিবন্ধে
মোরেশ্বর মন্দির, মোরগাঁও- পুণে শহর থেলে ৮০ কিলোমিটার দূরে মোরেশ্বরে অবস্থিত ময়ূরেশ্বর মন্দির। আস্থা বিনায়ক তীর্থ দর্শনের শুরু বা শেষ হয় মোরেশ্বর মন্দির থেকেই।
শ্রী সিদ্ধি বিনায়ক, সিদ্ধিতেক- আহমেদ নগর জেলার একমাত্র আস্থা তীর্থ সিদ্ধিতেক সিদ্ধি বিনায়ক। ভীমা নদীর উত্তর তীরে অবস্থিত। বাবুল গাছের ছায়ায় ঘেরা মন্দির। লোক বিশ্বাস আদিতে এই মন্দির বিষ্ণুদেব তৈরি করেছিলেন এই মন্দিরে বিনায়ক দেবতার নাসিকা দক্ষিণে। মানে ডানদিকে। সাধারণভাবে বামদিকে হয়। হিন্দু বিশ্বাস সিদ্ধিদাতার এমন মূর্তি অত্যন্ত শক্তিশালী। তবে সন্তুষ্ট করা খুব কঠিন।
বল্লালেশ্বর মন্দির, পালি- রায়গড় জেলার রোহা থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ১৬৪০ সালে স্থাপিত। প্রথম যুগে এই মন্দির ছিল কাঠের তৈরি। ১৭৬০ সালে আবার নতুন করে তৈরি করা হয়। পূর্বমুখ মন্দির, মূর্তি আলোকিত হয় সূর্যের আলোয়। পুজোর সময় সরাসরি মূর্তির মুখমন্ডল সূর্যের আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। জ্বলে ওঠে দেবতার হীরক নয়ন। সিদ্ধাদাতার সঙ্গে ঋদ্ধি সিদ্ধিকেও দেখা যায় এই মন্দিরে।
বরদা বিনায়ক মন্দির, মাহাদ- মহারাষ্ট্রের কোলাপুর জেলার খপলি ও কারজাটে অবস্থিত বরদা বিনায়ক মন্দির রামজী মহাদেব বিওয়ালকর ১৭২৫ সালে এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। লোনাভালা, পনভীল থেকেও কাছে। একাধিক মিথ আছে এই মন্দির নিয়ে। মন্দিরের সন্নিকটের জলাশয় থেকে সিদ্ধিদাতা স্বয়ম্ভুরূপে দেখা দেন। মন্দিরে একটি প্রদীপ আছে। শোনা যায়, ১৮৯২ সাল থেকে প্রদীপটি কখনও নেভেনি। সারা বছর তীর্থযাত্রীদের ভিড় লেগে থাকে। তবে মেঘা চতুর্থীতে উৎসব উপলক্ষে রেকর্ড ভিড় হয়।
চিন্তামণি মন্দির, থেউর- পুণে থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত চিন্তামণি মন্দির। আস্থাবিনায়ক মন্দিরগুলির মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়। বহু লোক কাহিনি প্রচলিত আছে মন্দির ঘিরে। পেশোয়ার শাসকরা মন্দিরের একনিষ্ঠ ছিলেন।
গিরিজাত্মজ মন্দির, লেনাদ্রী- আস্থাবিনায়ক মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। এই মন্দির লেনাদ্রী গণপতি মন্দির নামেও পরিচিত। গিরিজা বলা হয় দেবী পার্বতীকে। তাঁর আত্মজ মানে সন্তান গণপতি। তাই এই মন্দিরের নাম গিরিজাত্মজ মন্দির।
বিঘ্নহর মন্দির, ওজার- পুণে থেকে ৮৫ কিলোমিটার দূরে কুকাড়ি নদীর তীরে অবস্থিত বিঘ্নহর মন্দির। গণপতি এখানে বিঘ্ননাশকারী রূপে পূজিত হন। তাই এই মন্দিরের এইরূপ নামকরণ। মারাঠা শাসক পেশোয়ার প্রথম বাজিরাও-এর ভাই, সেনাপ্রধান চিমাজি আপ্পা এই মন্দির সংস্কার করেছিলেন এবং মন্দির চূড়া সোনা দিয়ে মুড়ে দেন। ১৯৬৭তে ফের সংস্কার করা হয় মন্দির। বর্তমানে সেইরূপটিই দেখা যায়।
মহাগণপতি মন্দির, রঞ্জনগাঁ- নবম-দশম শতাব্দীতে তৈরী হয়েছিল মন্দির। মূল মন্দিরটি স্থাপিত হয় পেশোয়া আমলে। গণপতি এখানে ‘মাহতকৎ’ নামে পূজিত হন। শোনা যায় আগে মূর্তির ১০টি শুঁড় এবং ২০ বাহুর।