বর্তমানে যে কয়েকটি অসুখ আমাদের যথেষ্ট দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তার মধ্যে কিডনির অসুখ অন্যতম। বিভিন্ন রকম ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা নিয়ন্ত্রণহীন ব্লাডসুগার এর অন্যতম কারন সেটা আমরা অনেকেই প্রায় জানি। কিডনির অসুখ এমন একটি অসুখ, যার নিরাময়ের কোনো আশাই থাকেনা। নিয়মিত চেক-আপের মাধ্যমে রোগী সুস্থ থাকে। যত দিন যায়, ততই রোগীর শরীর খারাপের দিকে এগোয়। নিয়মিত ডায়ালিসিস নিতে হয় এক্ষেত্রে, কিডনি প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে সুস্থ হওয়ার আশা থাকলেও প্ৰতিস্থাপনযোগ্য কিডনি পাওয়া মানে হাতে চাঁদ পাওয়ার সামিল। অপেক্ষায় কেটে যায় বছরের পর বছর। অনেক রোগী যদিও বা কিডনি পান, সেক্ষেত্রে গোটা অস্ত্রোপচার প্রক্রিয়ার যা খরচ, তা এতটাই ব্যয়বহুল, সেই খরচ জোগাতেই হিমশিম খেয়ে যান রোগী এবং তার পরিবারের লোকজন।
এক্ষেত্রে সুখবর এসে গেছে কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে। সুখবরটি শুনিয়েছেন মার্কিন প্রবাসীবাঙালি বিজ্ঞানী শুভ রায়। তিনি প্ৰতিস্থাপনযোগ্য কৃত্রিম কিডনি আবিষ্কার করেছেন। ২০১০ সালে আবিষ্কৃত এই কিডনি প্রথমে ইঁদুর এবং শূকরের শরীরে প্রতিস্থাপন করে পরীক্ষা করা হয়। সেই পরীক্ষা সফল হলে বর্তমানে বেশ কিছু রোগীর শরীরেও এই কৃত্রিম কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয় আমেরিকায়। যদি দেখা যায়, পরীক্ষা সফল হয়েছে, তাহলে মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ নিয়ন্ত্রক এফডিএ সেই কিডনি বাজারে ছাড়ার অনুমতি দেবে|
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নেফ্রোলজিস্ট উইলিয়াম এইচ ফিসেল এবং বাঙালি বিজ্ঞানী শুভ রায় একত্রে এই কৃত্রিম কিডনির আবিষ্কর্তা। তাই বাঙালি হিসেবে আমরা গর্ব বোধ করতেই পারি। তিনি জানান, হিমোডায়ালিসিসের মতোই কাজ করে কৃত্রিম কিডনি। বায়ো রিয়াক্টরের মাধ্যমে রক্তকে পরিশ্রুত করে শরীরকে টক্সিনমুক্ত রাখে। পাশাপাশি হরমোন উৎপাদন এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এই কৃত্রিম কিডনি। যার ফলে এগুলি নিখুঁতভাবে শরীরে কাজ করতে পারবে।
ডায়ালিসিস বা কিডনি প্রতিস্থাপনের তুলনায় তাঁর তৈরী কৃত্রিম কিডনির খরচ অনেকটাই কম বলে জানান শুভ রায়। এই আবিষ্কারের জন্য তিনি সান ফ্রান্সিসকোর বে বায়ো প্যান্থন পুরস্কারও পেয়েছেন।