ডায়াবেটিস চেনাবে চোখ

লাইফস্টাইল ও ডিপ্রেশন এই দুয়ের সমন্বয়ে শরীরে হানা দেয় ডায়াবেটিস। কিছুক্ষেত্রে বংশগত ভাবে এই রোগ হানা দিলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার পেছনে দায়ী থাকে বেহিসেবি জীবনযাপন এবং প্রতিদিনের চিন্তা ও দুশ্চিন্তা। প্রকৃতিগত দিক থেকে প্রকারভেদ থাকলেও সাধারণত যে দুটি প্রকার আমাদের দেশে পাওয়া যায় তা হলো টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস এবং টাইপ টু ডায়াবেটিস সমীক্ষায় দেখা গেছে, আমাদের দেশে আক্রান্ত হওয়া মানুষের বেশিরভাগই টাইপ টু ডায়াবেটিস দ্বারা আক্রান্ত। ঘন ঘন মূত্র ত্যাগের ইচ্ছে, অতিরিক্ত জল পিপাসা, অনিদ্রা এবং ওজন হ্রাস এই কয়েকটি লক্ষণকেই মূলত ডায়াবেটিসের প্রাথমিক লক্ষণ বলে ধরা হয়। কিন্তু আধুনিক গবেষণা জানাচ্ছে, ডায়াবেটিসের প্রাথমিক লক্ষণ প্রতিক্ষেত্রেই প্রথমে ধরা দেয় রোগীর চোখে। কিভাবে? চলুন জেনে নেওয়া যাক......

                         ডায়াবেটিসের প্রাথমিক লক্ষণগুলির মধ্যে একটি হলো চোখে ঝাপসা দেখা যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানুষ এড়িয়ে যান। আপাতদৃষ্টিতে এই সমস্যাটিকে বেশ নিরীহ বলে মনে হলেও এই ছোট ছোট লক্ষণগুলিই অনেকসময় মূল রোগের সাথে মানুষের প্রথমে পরিচয় করিয়ে দিতে সাহায্য করে থাকে। চিকিৎসকদের মতে, সুগার বা ডায়াবেটিস অনেকটা সাইলেন্ট কিলারের মতো। অল্প উপসর্গ দেখিয়ে কখন সারা শরীরে থাবা বসাবে তা কেউ জানেন না। রোগ ধরা পড়ার সাথে সাথে যদি সঠিক চিকিৎসা না করানো হয় তাহলে ধীরে ধীরে শরীরের সমস্ত অঙ্গপ্রতঙ্গ এই রোগের কবলে চলে যেতে শুরু করে। পরবর্তীকালে শরীরের সর্বত্র জালিকার আকারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রক্তবাহিকাগুলির ক্ষতি হতে শুরু করে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এই রোগ হানা দিয়েছে তা বোঝার খুব একটা সহজ উপায় নেই। তবে এই রোগ শরীরে থাবা বসলে প্রথম তার এফেক্ট দেখা যায় চোখেই। তাই চিকিৎসকেরা পরামর্শ দেন সুস্থ থাকলেও সকলের নিয়ম করে চোখের রেটিনা এবং চোখের প্রেসার অবশ্যই পরীক্ষা করানো উচিৎ।

                    চিকিৎসাবিজ্ঞানের কথানুযায়ী, ডায়াবেটিসের প্রভাব সরাসরি পড়ে চোখের রেটিনার উপরেই। তাই ডায়াবেটিসের ফলে চোখের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে সবচেয়ে বেশি। জানা গেছে, ডায়াবেটিস শরীরে হানা দিলে অস্পষ্ট দেখার পাশাপাশি চোখে নানা স্পটও দেখা যেতে শুরু করে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করলে পরবর্তীকালে চোখ থেকে রক্ত পড়ার সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ডায়াবেটিসের হাত থেকে চোখ বাঁচাতে গেলে প্রথমেই সচেতন থাকতে হবে যাতে শরীরে কোনোভাবেই ডায়াবেটিস হানা না দিতে পারে। তার জন্য আনতে হবে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন। একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর ডায়াবেটিস চেক করানো উচিৎ। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধের মাত্রা পরিবর্তন করাও প্রয়োজন। এছাড়াও বছরে দুই থেকে তিনবার চক্ষু পরীক্ষা করান। রক্তচাপের হাত ধরে শরীরে থাবা বসায় ডায়াবেটিস তাই রক্তচাপ কোনোভাবেই বাড়তে দেওয়া চলবে না। এর সাথে সাথে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে কোলেস্টেরলও। জীবনযাত্রায় পরিবর্তনের সাথে সাথে হালকা ব্যায়াম ও শরীরচর্চার দিকে খেয়াল রাখা উচিৎ

                                         বংশগত দিক থেকে ডায়াবেটিসের শিকার হলে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধ খাওয়া উচিৎ। বংশে কারোর ডায়াবেটিস থাকলে নিজের রক্তে চিনির পরিমান বাড়ছে কিনা তার দিকে বিশেষ খেয়াল রাখা উচিৎ।  

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...