জাতীয় জাদুঘরের অতিরিক্ত প্রত্ন সামগ্রীর দর্শনের নতুন গন্তব্য হতে চলেছে জাতীয় গ্রন্থাগারের বেলভেডেয়ার হাউস। বর্তমানে এক লক্ষেরও বেশি প্রত্ন সামগ্রীর মধ্যে মাত্র ১৫ শতাংশ দেখার সুযোগ পাওয়া যায় জাতীয় জাদুঘরে। তাই জাদুঘরের বাকি সামগ্রী প্রদর্শন করার জন্য, বেলভেডিয়ার হাউস-এ অস্থায়ী ভাবে সংরক্ষণের উদ্যোগ নিলো কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক মন্ত্রক।
তিব্বতি 'ব্ল্যাক হ্যাট' নাচে ব্যাবহৃত অস্ত্র দেবতা, চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের প্রাসাদের কড়ি-বড়গা, অতীশ দীপঙ্করের অষ্ট -ধাতুর মূর্তি, বিরল বুদ্ধ মূর্তি, সম্রাট আলেকজান্ডারের মুদ্রা-দশ দ্রাকমা সমূহ পড়ে রয়েছে ভারতীয় জাদুঘরের স্টোর রুমে। এরকম আরো বিরল প্রত্ন সামগ্রীর সংগ্রহ বহুদিন রয়ে গেছে লোক চক্ষুর আড়ালে। এই নিয়ে বেশ আক্ষেপ রয়েছে জাতীয় জাদুঘর কর্তৃপক্ষের। এবারে সেই আক্ষেপ মিটতে চলেছে বলে আশাবাদী তারাও।
৩০০ বছর ছুঁয়ে ফেলা বেলভেডেয়ার হাউস এখন প্রায় শূন্য। বইপত্রের বিশাল অংশ সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল অনেক আগেই। ঐতিহাসিক হেরিটেজ হাউসকে ইতিমধ্যেই 'ভাষা জাদুঘর' রূপে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক মন্ত্রক। ভারতীয় ইতিহাসে ভাষার বিবর্তন আজকে কেমন রূপ নিয়েছে তা দিয়ে সাজানো হয়েছে 'ভাষা জাদুঘর'। সংগ্রহ শালার বেশ কিছু অংশ জুড়ে সাজানো রয়েছে রবিঠাকুর, সুভাষ চন্দ্র বসু, এবং শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়-এর সৃষ্টি শৈলী। ভাষার প্রতি সদিচ্ছার পাশাপাশি জাতীয় গ্রন্থাগারে প্রত্ন সামগ্রী দর্শনের সুযোগ পেলে বাড়বে দর্শনার্থীদের ভিড়- এমনটা নিয়েও আশাবাদী কতৃপক্ষ।
ভারতীয় জাতীয় জাদুঘরে থেকে বিশেষ সুরক্ষার সাথেই প্রত্ন সামগ্রী সমূহ বেলভেডেয়ার হাউসে স্থানান্তর করা হবে। নির্বাচিত কিছু দর্শনীয় সামগ্রী ক্রেট বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হবে বেলভেডেয়ার হাউসে। এসব দিয়ে প্রাসাদের 'বিশাল ঘরে' তৈরী হবে একটি গ্যালারি। সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হতে থাকবে প্রদর্শিত সামগ্রী। ফলে নতুন নতুন প্রত্ন সামগ্রী দর্শনের সুযোগ হবে দর্শনার্থীদের। এসব সামগ্রীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে, সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষীর ব্যবস্থা থাকবে বলে জানান ভারতীয় জাদুঘরের অধিকর্তা রাজেশ পুরোহিত। জাতীয় গ্রন্থাগারে প্রত্ন-প্রর্দশনী শুরু হলে অচিরেই আলিপুর চিড়িয়াখানার পাশাপাশি ভিড় বাড়বে বেলভেডেয়ার হাউসেও।